নিষ্ঠা, আন্তরিকতাই সম্বল সেই পুজোয়

বর্তমানে বাংলাদেশের নাটোরের রানি ভগবতী ঠাকুরানির সেবাইত মহাতাপচন্দ্র চক্রবর্তী ১৩০৯ সালে এই পুজো শুরু করেন। জমিদারী প্রথা মেনে দুর্গা

Advertisement

তন্ময় দত্ত

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫৫
Share:

জাজিগ্রামে প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র

সপ্তমীর ভোগ পান্তা ভাত। বিসর্জনে দশটি হাতি ও প্রচুর ঘোড়া – মুরারইয়ের জাজিগ্রামের চক্রবর্তী পরিবারের পুজোয় নিয়ম-আচার ও জাঁকজমকের রমরমা আর নেই। হাতি, ঘোড়ার শোভাযাত্রা কবেই থেমে গিয়েছে। আছে শুধু ভক্তপ্রাণ পরিবারের সদস্যদের নিষ্ঠা আর আন্তরিকতা। সেটুকু সম্বল করেই পুজোর আয়োজন। আবাহন, বিসর্জন সবকিছু।

Advertisement

বর্তমানে বাংলাদেশের নাটোরের রানি ভগবতী ঠাকুরানির সেবাইত মহাতাপচন্দ্র চক্রবর্তী ১৩০৯ সালে এই পুজো শুরু করেন। জমিদারী প্রথা মেনে দুর্গা বিসর্জনের সময় দশটি হাতি ও প্রচুর সংখ্যায় ঘোড়া শোভাযাত্রায় থাকত। সেসব এখন অতীত। কিন্তু পুজোতে কোনও খামতি দেন না চক্রবর্তী পরিবার। বহু বছরের প্রাচীন পুজো হওয়ায় মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের বহু ভক্ত ভিড় জমান এই পারিবারিক পুজোয়।

পুরনো রীতি মেনে দেবীকে বেদিতে তোলেন গ্রামের যাদব পরিবার। সপ্তমীতে পান্তাভাতের ভোগ দেওয়া হয়। পুজো শেষে বেদি থেকে দেবী মূর্তি নামানোর ভারও পড়ে সেই যাদব পরিবারের উপরেই। পরিবারের কোনও সদস্য এই কাজটি করতে পারেন না। কুলগুরুর কাছে দীক্ষিতরাই একমাত্র ভোগ রান্না ও ফল কাটার কাজ করেন। পরিবারে যে সব সদস্য দীক্ষিত নন তারা কেউ পুজোর কোনও কাজই করতে পারেন না। বিসর্জনের কাজটি করেন গ্রামের মাল সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা।

Advertisement

চক্রবর্তী পরিবারের বর্তমান পুজোর আয়োজক গৌরীশঙ্কর চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘‘এখনও পুরনো রীতি মেনেই পুজো হয়। সপ্তমী,অষ্টমী ও নবমীতে কচি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়। সপ্তমীর দিন পান্তা ভাতের ভোগ সব গ্রামবাসীদের দেওয়া হয়। নবমীর

দিন আমন্ত্রিতদের মায়ের ভোগ খাওয়ানো হয়।’’ স্থানীয় বাসিন্দা প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাচীন পুজো হওয়ায় এই পুজোকে ঘিরে বহু কাহিনি আছে। ভক্তরা আছে বিভিন্ন গ্রামের। মনস্কামনা পুরণের জন্য অনেকে মানত করেন। দেবীর দশ ভরি সোনার ও কুড়ি ভরি রূপোর অলঙ্কার রয়েছে। পুজোর দিনে এই অলঙ্কার দিয়ে সাজানো হয়।’’ দশমীতে বিসর্জনের পালা। এই দিন দেবীর আশীর্বাদী সুতো বাঁধা হয় হাতে। একে অপরাজিতা পুজো বলে। বহু দূর থেকে ভক্তরা ভিড় করেন। ফের অপেক্ষা থাকে পরের বছরের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement