Bandoyan

ঝাড়খণ্ডে ফিরল না হাতিরা, নষ্ট ফসল

বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চলের ভোমরাগোড়া হয়ে খড়বন ও ঠরকাদহ গ্রামের মাঝের জঙ্গলে থেকে যায় হাতির দলটি। কোনও ভাবেই ঝাড়খণ্ড সীমানা পার করানো যায়নি দলটি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১৪
Share:

পিষে: বান্দোয়ানের লতাপাড়া গ্রামে হাতির হানায় তছনছ ফুলকপির চাষ। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।

তাণ্ডব চালানো হাতির দলটিকে গভীর জঙ্গলে পাঠাতে সোমবার রাতভর অভিযান চালাল পুরুলিয়া বন দফতর। বনকর্মীদের বিস্তর চেষ্টায় বান্দোয়ানের যমুনা বনাঞ্চল, বান্দোয়ান ১ বনাঞ্চল ও বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চল হয়ে দলটি মঙ্গলবার ভোরে ঝাড়খণ্ড সীমানায় পৌঁছয় বটে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলে না গিয়ে, পরে বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চলের ঠরকাদহ ও খড়বনের মাঝের জঙ্গলে গা ঢাকা দেয় হাতির দলটি। যাতায়াতের পথে এ দিনও প্রায় এক হেক্টর জমির ফসল দলটি তছনছ করে বলে জানিয়েছে বন দফতর। মঙ্গলবার রাতে ফের দলটিকে জঙ্গলে পাঠানোর চেষ্টা চালায় বন দফতর।

Advertisement

ডিএফও (কংসাবতী দক্ষিণ) অর্ণবকুমার সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড সীমানায় রয়েছে হাতির দলটি। তাদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। যাঁদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাঁরা বন দফতরের অফিসে যোগাযোগ করলে, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’

শনিবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রামের বাঁশপাহাড়ির দেশমহুল গ্রামের দিক থেকে যমুনা বনাঞ্চলের ঢুকে পড়ে ১৩টি হাতির দল। ওই দলে দু’টি শাবক ও একটি দাঁতাল রয়েছে। পথে এক বৃদ্ধ ও এক বনকর্মীকে আহত করে হাতিরা। তিন দিনে প্রায় সাত হেক্টর ফসল নষ্ট করেছে বলে জানিয়েছে বন দফতর। ফলে দলটিকে ঝাড়খণ্ডে ফেরত পাঠানোর দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাতে বান্দোয়ানের যমুনা বনাঞ্চলের কাটাগোড়া গ্রামের কাছ থেকে হাতির দলটিকে ফেরত পাঠানোর জন্য অভিযান শুরু করে বন দফতর। কিছুটা গিয়ে আবার ফিরে আসে হাতির দলটি। বান্দোয়ান ব্লক সদরের দিকে হাঁটা দেয়। পরে হাতির দলটিকে যমুনা বনাঞ্চলের কাটাগোড়া থেকে মধুবন, ধাদকা হয়ে বান্দোয়ান ১ বনাঞ্চলের লতাপাড়ার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বান্দোয়ান ২ বনাঞ্চলের ভোমরাগোড়া হয়ে খড়বন ও ঠরকাদহ গ্রামের মাঝের জঙ্গলে থেকে যায় হাতির দলটি। কোনও ভাবেই ঝাড়খণ্ড সীমানা পার করানো যায়নি দলটি।

রাতভর অভিযানের সময়ে লতাপাড়া গ্রামের কাছে টমেটো, লাউ, মটরশুঁটি, বাঁধাকপি, ফুলকপির ক্ষতি করে হাতির দলটি। লতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মতিলাল কুম্ভকারের বেশ কয়েক বিঘা জমিতে মটরশুঁটি লাগানো ছিল। রাতে হাতির দলটি মটরশুঁটির খেত মাড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন মতিলালবাবু। তাঁর দাবি, “কয়েকমাস আগে কয়েক বিঘা জমিতে মটরশুঁটি চাষ করেছিলাম। কিন্তু হাতি দলটির পায়ের চাপে মাটিতে গাছ মিশে গিয়েছে। ওই গাছে আর ফলন সম্ভব নয়। কী ভাবে এই ক্ষতিপূরণ হবে?’’ এলাকার আর এক চাষি রাকেশ দত্তের অভিযোগ, ‘‘ধার করে লাউ গাছের চাষ করেছিলাম। হাতিরা সব গাছ নষ্ট হয়ে দিল। কপাল চাপড়ানো ছাড়া, কোনও উপায় নেই!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement