স্বাস্থ্যকর্মীরা যক্ষ্মা রোগীর হাতে পুষ্টিকর খাবার তুলে দিচ্ছেন। নিজস্ব চিত্র birsachi@gmail.com
যক্ষ্মা রোগীদের পুষ্টিগত সহযোগিতা প্রদান করতে এগিয়ে এলেন আশাকর্মীরাও। বুধবার মল্লারপুরে চার জন আশাকর্মী ‘নিক্ষয় মিত্র’ হিসাবে এলাকার চার যক্ষ্মা রোগীকে ৬ মাসের জন্য দত্তক নিলেন। এই ছ’মাস চার রোগীকে পুষ্টিকর খাওয়ার জোগানোর দায়িত্বে থাকবেন ওই আশাকর্মীরা। তাদের এই উদ্যোগ জেলার যক্ষ্মা দূরীকরণ কর্মসূচিকে আরও উৎসাহ জোগাবে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।
বীরভূম এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলায় অনেক আগেই এই কাজ শুরু হয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ক্লাব এবং অনেকে ব্যক্তিগত ভাবেও ‘নিক্ষয় মিত্র’ হয়েছেন। কিন্তু, এই প্রথম ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের চার জন আশাকর্মী ‘নিক্ষয় মিত্র’ হলেন বলে দাবি জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। ওই আশাকর্মী ডলি মণ্ডল, শুক্লা সিংহ, মিঠু সাউ, শম্পা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যক্ষ্মা রোগ নির্মূল কর্মসূচিতে শামিল হতে পেরে ভাল লাগছে। আরও অনেকে এই ভাবে যক্ষ্মা রোগীদের পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে যক্ষ্মা রোগ নির্মূল কর্মসূচি সফল হবে।’’
এ দিন ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এক লপ্তে ৪০ জন যক্ষ্মা রোগীকে পুষ্টিগত সহযোগিতা প্রদানে এগিয়ে আসেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীন কর্মরত ৩৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের উপরতলায় সভাকক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শোভন দে, বিডিও (ময়ূরেশ্বর ১) অর্ক গুহ, স্বাস্থ্যজেলার যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ আধিকারিক পার্থসারথি দাস সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা যক্ষ্মা রোগীদের হাতে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্যসামগ্রীর কিট তুলে দেন।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌরভ চক্রবর্তী জানান, ব্লকের অধীন ৬০টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে যক্ষ্মা রোগীদের হাতে পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি নিজে এবং ৬ জন মেডিক্যাল অফিসারের পাশাপাশি দু’জন ল্যাব টেকনিশিয়ান সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে মোট ৩৫ জন নিক্ষয় মিত্র হয়েছেন। ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকে ৮৪ জন যক্ষ্মা রোগীকে ‘নিক্ষয় মিত্র’ হিসাবে পুষ্টিকর খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর দাবি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘যক্ষ্মারোগ নির্মূল কর্মসূচিতে নিক্ষয় মিত্র হিসাবে বিএমওএইচ সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল আশাকর্মীরা এই কর্মসূচিতে এগিয়ে এসেছেন, যা দেখে অন্যান্য ব্লকের আশাকর্মীরাও উৎসাহ বোধ করবেন।’’