—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র হলেও কিছু অস্ত্রোপচারের জন্য টাকা গুনতে হত রোগীদের। ওই অভিযোগ-সহ বারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবা নিয়ে আরও নানা অভিযোগ পৌঁছয় জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। তার প্রেক্ষিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়েছে ওই কেন্দ্রের বিএমওএইচকে। ছুটিতে পাঠানোর কথা স্বীকার করলেও পরিষেবার বিনিময়ে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএমওএইচ হরিপদ মণ্ডল।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, “একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে বারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তদন্ত গিয়ে একাধিক সূত্রে বেশ কিছু অভিযোগ আমরা পাই। তার পরে বিএমওএইচকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। পরিষেবার বিনিময়ে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও মিলেছে। গোটা বিষয়টিই রাজ্য স্বাস্থ্যভবনকে জানানো হয়েছে।”
ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার। ওই দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া পুকুর থেকে এক সদ্যোজাতের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় গর্ভপাত করানোর একটি চক্র এলাকায় সক্রিয় রয়েছে, এই মর্মে খবর পৌঁছয় জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। পর দিনই ওই কেন্দ্রে সরজমিনে তদন্তে যান মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। কেন্দ্রে ভর্তি থাকা রোগী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
সূত্রের খবর, সে সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিছু ক্ষেত্রে পরিষেবার জন্য আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ একাধিক সূত্রে ওই স্বাস্থ্যকর্তার কানে যায়। অভিযোগ নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা প্রদানের কাজে যুক্ত থাকা বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
পরে সে দিনই নির্দেশিকা জারি করে বিএমওএইচকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয়।
ওই ব্লকের বসন্তপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার রবিশেখর কুমার রবিকে বারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর সঙ্গে ওই কেন্দ্রে কর্মরত এক নার্সকে দিঘি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বদলি করা ও একঅস্থায়ী মহিলা সাফাইকর্মীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
ওই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন বলেন, “এটা ঘটনা যে বারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কিছু অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আসছিল। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যা কখনই কাম্য নয়। দফতরের কাছেও এই মর্মে অভিযোগ পৌঁছেছে। তার পরে বিএমওএইচকে ছুটিতে পাঠানো ছাড়া বেশ কিছু পদক্ষেপ হয়েছে।” তবে বিভাগীয় তদন্তে কী মিলেছে, তার রিপোর্ট এখনও তিনি পাননি বলে জানান তিনি।
বিএমওএইচের দাবি, “মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক যে দিন এসেছিলেন, সে দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ছিলাম। সকালের দিকে রোগীও দেখেছি। কেন্দ্রে কিছু অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। জানি না কেন এই অভিযোগ উঠছে।”