মানবাজার ২ ব্লকের বুরুডি মোড়ে পথ অবরোধ। ছবি: রথীন্দ্রনাথ মাহাতো।
কুড়মি সমন্বয় মঞ্চের ডাকে ‘হুড়কা জাম’ কর্মসূচিতে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া ও দক্ষিণ বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকায় পথ অবরোধ হওয়ায় জনজীবনে প্রভাব পড়ল। পুরুলিয়া জেলার অধিকাংশ রুটে বন্ধ ছিল বেসরকারি বাস চলাচল।
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মানবাজার থানার তিনটি এলাকা দুলালডি, বিশরী ও জবলায় পথ অবরোধ করা হয়। বরাবাজার থানার সিন্দরি ও বামনিডি গ্রামে অবরোধ করা হয়। এ ছাড়া, পুঞ্চা থানার কৈড়া, বোরো থানার বুরুডি ও হুড়া থানার লালপুরে অবরোধ হয়।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অন্য থানাগুলির অবরোধ কর্মসূচি দুপুরের আগেই প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও মানবাজার থানা এলাকার তিনটি জায়গায় অবরোধ কর্মসূচি বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলে। মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় বোরো থানার বুরুডি গ্রামের তেরাস্তার মোড়ে দেখা যায়, অবরোধকারীরা ঢোল-ধামসা নিয়ে ঝুমুর গান গাইছেন।
বারিকুল থানার ফুলকুসমা, জানডাঙা, সারেঙ্গার পিড়লগাড়ি, সিমলাপালের বিক্রমপুরে, বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম ৯ নম্বর রাজ্য সড়কে সমাজের পতাকা নিয়ে পথে নামেন সমন্বয় মঞ্চের লোকজন। সংগঠনের তরফে আগাম মাইকে এদিনের কর্মসূচির কথা প্রচার করায় ওই রাস্তায় এ দিন যানবাহন চলেনি।
‘পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজ’-এর রাজ্য সহ-সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো বলেন, ‘‘সমন্বয় মঞ্চে চারটি সংগঠন যুক্ত রয়েছে। ‘পূর্বাঞ্চল আদিবাসী কুড়মি সমাজ’, ‘কুড়মি সেনা’, ‘আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজ’ ও ‘কুড়মি সমাজ’। আমাদের মূল দাবি, কুড়মি সম্প্রদায়কে আদিবাসীর স্বীকৃতি দিতে হবে। ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্রথম কুড়মি শহিদ রঘুনাথ মাহাতোর নাম যুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া, আরও কিছু দাবি রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, দাবি-দাওয়া না মিটলে ধীরে ধীরে আন্দোলন ‘চূড়ান্ত’ পর্যায়ে নিয়ে যাবেন।
সমন্বয় মঞ্চের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি সুনীতি মাহাতো, কুড়মি সমাজের রাজ্য কমিটির সদস্য উত্তমকুমার মাহাতো জানান, এ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁরা সেই বার্তা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন। আদিবাসী কুড়মি সমাজের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক সঞ্জয় মাহাতো জানান, এ দাবিতে আজ, শুক্রবার তাঁদের ‘কলকাতা চলো’ কর্মসূচি আছে।
পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ও বুধবার জেলার নানা প্রান্তে হুড়কা জামের সমর্থনে মাইকে প্রচার হয়েছে। তাই রাস্তায় নেমে পাছে কোনও ঝামেলায় জড়িয়ে যান, এই আশঙ্কায় কর্মীরা এ দিন কেউ বাস নিয়ে রাস্তায় নামেননি। আন্তঃরাজ্য কয়েকটি বাস জেলায় এলেও তাতে যাত্রী প্রায় ছিল না। রঘুনাথপুর মহকুমা এলাকায় কিছু বাসের দেখা মিললেও তাতে যাত্রী ছিল না।’’ এসডিপিও (মানবাজার) রাহুল পান্ডে বলেন, ‘‘হড়কা জাম কর্মসূচিতে বেশির ভাগ অবরোধ মানবাজার মহকুমা এলাকার মধ্যে ছিল। তবে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের নজরদারি ছিল।’’