প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা। তাই তাঁকে ‘শিক্ষা’ দিতে বিদ্যুতের হাই টেনশন টাওয়ারে উঠে পড়লেন এক যুবক। খবর চাউর হতেই প্রশাসনের কড়াকড়ি ভুলে টাওয়ারের নীচে জড়ো হয়ে যান অনেকে। টাওয়ার থেকে নেমে আসতে কেউ তাঁকে চিৎকার করে বোঝাতে থাকেন। কেউ বা আবার মোবাইলে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয় পড়েন।
সোমবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়ার ঝালদার বিরুডি গ্রামের ঘটনা। খবর পেয়ে শেষমেশ তুলিন ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে কথাবার্তা চালিয়ে টাওয়ার থেকে নামায় ওই যুবককে। ভবিষ্যতে তিনি যাতে এমন কাণ্ড না করেন, সে জন্য তাঁর কাছ থেকে মুচলেকা লিখিয়ে নেয় পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন কিছু করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
ঝালদার বিরুডি গ্রামের বাসিন্দা বছর তিরিশের ওই যুবক। স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। দিনমজুরি করে চলে। পড়শিরা জানাচ্ছেন, নানা কারণে তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকে। মাঝেমধ্যে পড়শিদেরও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।
তবে সোমবারের ঘটনা যেন সব কিছুকে ছাপিয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই দিন বিকেল থেকে কোনও বিষয়কে কেন্দ্র করে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। পড়শিরা জানান, রোজকার মতো ঘটনা ভেবে তাঁরা গুরুত্ব দেননি। এক পড়শির কথায়, ‘‘স্ত্রীর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটির পরে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ওই যুবক। কিছুক্ষণে পরে খবর আসে, গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের মাঠে থাকা হাই টেনশন টাওয়ারে উঠতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কী অনর্থ করে বসেন ভেবে সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম ভেঙে সবাই সেখানে ছুটি।’’
তবে নরমে-গরমে চেষ্টা করেও ওই যুবককে সেখান থেকে নামানো যায়নি। এর পরেই কেউ খবর দেন তুলিন ফাঁড়িতে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক টাওয়ারের প্রায় ৩০ ফুট উপরে উঠে বসেছিলেন। নেমে আসতে বললে তিনি দাবি করেন, স্ত্রী গিয়ে ভুল স্বীকার না করা পর্যন্ত কিছুতেই নামবেন না। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি— বেশি জোরাজোরি করলে টাওয়ার থেকে তিনি লাফ দেবেন।
পুলিশ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে আসে। তিনি ভুল স্বীকার করলে সন্ধ্যায় টাওয়ার থেকে নেমে আসেন যুবক। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন পুলিশকর্মী ও পড়শিরা। টাওয়ার থেকে নেমে পুলিশের কাছে ওই যুবক অভিযোগ করেন, ‘‘কথায় কথায় শুধু ঝামেলা। তাই ভেবেছিলাম, প্রাণ রেখে আর লাভ নেই। তবে যখন স্ত্রী ভুল স্বীকার করেছে, তখন মিটিয়ে নিলাম।’’