ছায়া: রোদ থেকে বাঁচতে ভরসা গামছা। বিষ্ণুপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
মাঝ চৈত্রেই রোদ যা ভেল্কি দেখাচ্ছে, তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে থাকছেন বড়রা। কারণ আজ শনিবার থেকেই সারা রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলগুলি সকাল বেলায় চালু হচ্ছে।
তবে হঠাৎ করে দাবদাহ শুরু হওয়ার জন্য নয়, নিয়মমাফিক এখন ১ এপ্রিল থেকে বেলার পরিবর্তে সকালে প্রাথমিক স্কুল চালু হয়ে যাচ্ছে। তাই অভিভাবকদের বলতে শোনা যাচ্ছে— ‘‘যাক বাবা, ছেলেমেয়েগুলো সকাল-সকালই স্কুল থেকে ফিরবে। রোদে তেতে-পুড়ে আসা থেকে ওরা রক্ষা পাবে, এটা ভেবেই ভাল লাগছে।’’ যদিও হাইস্কুলগুলিতে কবে সকালে ক্লাস শুরু হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও বার্তা প্রশাসনের তরফে পাওয়া যায়নি।
কয়েক বছর আগে গরমে চাঁদি ফাটলেও ছোটদের যথারীতি বেলায় বইয়ের বোঝা পিঠে স্কুলে যেতে হতো। যখন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরত, তখনও আকাশে গনগন সূর্য থাকত। কবে শিক্ষা দফতর ‘মনিংস্কুল’ চালুর নির্দেশ দেবে, তারই অপেক্ষায় থাকতেন অভিভাবকেরা। তবে এ বার গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রাইমারি স্কুলগুলিতে সকালে ক্লাস চালু শুরু হওয়ায় সবাই খুশি।
চলতি বছরে শিক্ষা দফতরের ওই নিয়ম মোক্ষম সময়ে কার্যকর হচ্ছে বলে অভিমত বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, “এই গরমে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আমরা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। আর চিন্তা নেই। শনিবার থেকে সকালে স্কুল চালু হচ্ছে। এ বার অসুবিধা অনেকটাই কম হবে।” একই স্বস্তির কথা শুনিয়েছেন পুরুলিয়ার জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড়ও।
বাঁকুড়া শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুলও আগাম সতর্ক হয়ে স্কুলের সময় আরও এগিয়ে এনেছে। বাঁকুড়ার কুচকুচিয়ায় শিশুদের স্কুল ‘ড্যাফোডিলস’- এর অধ্যক্ষা অনুমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অত্যাধিক গরমের কারণে স্কুল চালুর সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে এনে সকাল সাড়ে সাতটা করে দিয়েছি। অভিভাবকদের বলেছি, শিশুদের জলে ‘ওআরএস’ গুলে দিতে।”
তবে হাইস্কুলগুলিতে এখনও সকালে স্কুল করার কোনও নির্দেশিকা আসেনি। বাঁকুড়ার মগরা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকেশ পাত্র বলেন, “স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের হাজিরা কমছে। মিড-ডে মিল খেতেও অস্বস্তি হচ্ছে পড়ুয়াদের। তাই জেলা স্কুল পরিদর্শককে ই-মেল করে সকালে স্কুল করার আবেদন জানিয়েছি।” বাঁকুড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পঙ্কজ সরকার বলেন “রাজ্য শিক্ষা দফতরে সমস্যার কথা আমরাও জানিয়েছি। অনুমতি পেলেই সকালে স্কুল চালু হয়ে যাবে।”
তবে হঠাৎ গরম পড়ে যাওয়ায় শনিবার থেকেই সকালে স্কুল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে কাশীপুর জনার্দন কিশোর গার্লস হাইস্কুল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিতালি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু কাশীপুর নয়, আশপাশের বহু এলাকা থেকে মেয়েরা স্কুলে আসে। তীব্র গরমে ওদের কষ্টের কথা ভেবেই সকালে স্কুলের সিদ্ধান্ত নিতে হল।’’