ফাইল চিত্র।
সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নামে-বেনামে থাকা একাধিক সম্পত্তির হদিস মিলেছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। কিছুদিন আগে অনুব্রতের এক খামারবাড়ির পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের নামেও একাধিক জমি ও সম্পত্তির সন্ধান মিলেছিল। ফের অনুব্রতের নামে বোলপুরের নানা এলাকায় একাধিক জমির খোঁজ মিলল।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা ও তাঁর প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডলের নামে বল্লভপুর, মকরমপুর, গয়েশপুর, খোসকদমপুর ও কালিকাপুর মৌজা এলাকায় একাধিক জমি রয়েছে। পাশাপাশি গয়েশপুর মৌজায় ১৬টি জমি, বোলপুর মৌজায় ৪টি এবং খোশকদমপুর মৌজায় ২টি জমি অনুব্রতের নিজের নামে রয়েছে বলেও সরকারি সূত্রের খবর। এই সব জমি ২০২১ সালে কেনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এ ছাড়াও গয়েশপুর মৌজায় ২০১৮ সালে ১টি, ২০১৯ সালে ২টি জমি এবং ২০১৭ সালে ৩টি জমি কেনা হয়। সব মিলিয়ে ২০১৭ থেকে ’২১ সালের মধ্যে তৃণমূলের জেলা সভাপতির নামে প্রায় ২৪০ কাঠা জমি কেনা হয়েছে বলে সরকারি তথ্যেই পাওয়া যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, “শুধু বোলপুরেই নয়, বোলপুরের বাইরে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করলেই নামে বেনামে আরও সম্পত্তি মিলবে।” প্রসঙ্গত, অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর নিকটাত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের নামে-বেনামে বিপুল সম্পত্তি ও জমিজমা আছে বলে প্রথম থেকে দাবি করেছে সিবিআই। অনুব্রতের সম্পত্তির পরিমাণ কত, তা সন্ধান করতে মঙ্গলবার বোলপুরের জমি রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের আরও দাবি, ২০১৪ সালের পর থেকে লাফিয়ে বেড়েছে অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠজনের সম্পত্তির পরিমাণ। এত আয়ের উৎস কী এবং জমিগুলি কেনার পিছনে কোনও প্রভাব খাটানো হয়েছিল কি না, সে-সবও খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “যত দূর জানি, ওঁর (অনুব্রত) আয়ের কোনও উৎসই ছিল না। সেখানে এত জমি-জায়গা কী ভাবে ওঁর নামে হতে পারে, সেটাই আমাদের প্রশ্ন! আমরা চাই এই সবের পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।’’ বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অষ্টম মণ্ডল বলেন, “এ তো খুবই সামান্য! ওঁর এমন শত শত জমির হদিস মিলবে, সঠিক তদন্ত করা হলে।” যদিও এ নিয়ে জেলা তৃণমূলের কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।