সরকারি প্রকল্পের সুবিধাগুলি উপভোক্তারা কি ঠিকঠাক পাচ্ছেন? না পেলে বাধা কোথায়? দফতরের সমন্বয়ের অভাবে আটকে থাকছে না তো প্রকল্পের সুফল! এমনই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে জেলা প্রশাসন এ বার হাজির গ্রামে গ্রামে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘গো টু ভিলেজ’ কর্মসূচিতে প্রশাসনিক কর্তারা নিয়মিত গ্রামে আসবেন।
শনিবার পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ও মানবাজার মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা দিনভর মানবাজার ২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শোনেন। পরিদর্শক দলে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি সামিন সওকত, অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক মহম্মদ তাহেরুজ্জুমান, মানবাজার মহকুমার ডিএমডিসি তারকনাথ দাস, বিডিও (মানবাজার ২) তারাশঙ্কর প্রামাণিক, জয়েন্ট বিডিও সন্দীপ প্রামাণিক, সিডিপিও অশোক মণ্ডল, প্রাণিবিকাশ দফতরের আধিকারিক সুব্রত প্রামাণিক, খাদ্য পরিদর্শক বিজয় মাণ্ডি, বিদ্যালয় পরিদর্শক ননীগোপাল মাঝি, বিমান বিট প্রমুখ। এ দিনের সফরে জেলাশাসকের থাকার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি সকালে পুরুলিয়া ফিরে যান।
প্রথমে পরিদর্শক দল কাশীডি ও কাল্লাগোড়া গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যান। বাসিন্দাদের ডেকে জানতে চান, কেন্দ্র প্রতিদিন খোলা থাকে কিনা। শিশু ও মায়েরা প্রতিদিন ডিম পান কিনা। পরে দিঘি গ্রামের রেশন ডিলারের ওজন পরিমাপক যন্ত্রও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন তাঁরা। বারি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনের সময়ে বিএমওএইচ কৌশিক ঢাল বলেন, ‘‘বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৩৫০ রোগী চিকিৎসা পান। যদিও চিকিৎসক মাত্র দু’জন।’’ পরিদর্শক দল জেলায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দেন।
পাশাপাশি, গ্রামবাসীও তাঁদের অভাব-অভিযোগ জানান। কুটনি গ্রামের তেমাথায় ‘আম দরবার’ বসেছিল। সেখানে কারা বার্ধক্যভাতা পান, ভাতা পেতে কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা, এ সব জানতে চাওয়ার মাঝেই বাসিন্দা ঘনশ্যাম মোদক বলে ওঠেন, ‘‘স্থানীয় রেশন দোকান সপ্তাহে এক দিন মাত্র খোলা থাকে। প্যাকেটের আটা ভাল নয়। ওজনেও কম থাকে।’’ সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য পরিদর্শককে ডেকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিনের পরিদর্শনের শেষে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি সামিন সওকত বলেন, ‘‘সরকারি প্রকল্পের সুবিধাগুলি যাতে সকলে পান, তা সুনিশ্চিত করাই লক্ষ্য।’’ নিয়মিত এই নজরদারি চলবে বলে জানান তিনি।