প্রতীকী ছবি।
জমিদাতা, শ্রমজীবী মানুষ থেকে ক্রাশার, খাদান মালিক, মহম্মদবাজারে প্রস্তাবিত ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনির জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্যাকেজ হিসাবে কার জন্য কী রয়েছে সেটা নিয়ে জোরকদমে প্রচারে নামতে চলেছে জেলা প্রশাসন। প্যাকেজের বক্তব্য সহজ করে বাংলা ও অলচিকি হরফে লিফলেট আকারে ছাপিয়ে প্রচার শুরু করবে প্রশাসন। যাতে প্রত্যেকে এই বিষয়ে অবগত হন। একথা জানিয়েছেন জেলাশাসক বিধান রায়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মহম্মদবাজারে প্রস্তাবিত ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনির জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। বারাদ্দকৃত রাশি ১০ হাজার কোটি টাকা। ১০ হাজার কোটি টাকা ঠিক কোন কোন খাতে ব্যয় হবে সে ব্যাপারেও আলোকপাত করা হয়েছে। তারপরই খনি হলে তাঁদের কতটা ভাল বা খারাপ হবে, এই নিয়ে এলাকায় বিস্তর আলোচনা চলছে। যদিও আশ্বাস জেদাজেদি করে নয় বরং সকলে আস্থা অর্জন করেই শিল্প স্থাপনে উদ্যোগী হবে সরকার। কিন্তু প্রশাসনের উপলব্ধি অত্যন্ত সদর্থক প্যাকেজ ঘোষিত হলেও, এই সংক্রান্ত সব তথ্য সবস্তরে সঠিক ভাবে পৌঁছায়নি বা পৌঁছলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধোঁয়াশা রয়েছে। এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনায় বসার আগে যাতে প্রস্তুতিতে কোথাও ফাঁক না থাকে ব্লক পঞ্চায়েত সেটা সুনিশ্চিত করতে চাইছে প্রশাসন। সঙ্গে এলাকায় নানা উন্নয়নমূলক কাজ চালিয়ে যাওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রত্যেকের কথা মাথায় রেখে প্যাকেজ ঘোষিত হয়েছে। তারপরও কী কী প্রশ্ন উঠে আসতে পারে সেগুলিকেও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। প্যাকেজ চূড়ান্ত করার আগে নানা সমীক্ষা ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। শেষ বৈঠক ছিল গত মাসের ২২ তারিখ। প্যাকেজ ঘোষণা হওয়ার পর কী ভাবে এগোতে হবে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে সেখানে। লিফলেট ছাপিয়ে সকলকে প্যাকেজ সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া সেই আলোচনারই অঙ্গ।
জেলাশাসক জানান, সকলের আস্থা বজায় রেখে সরকার নির্দেশিত পথে এগোনো হবে। ভুল বোঝাবুঝি এবং সমন্বয়ের অভাব যাতে না হয় সে ব্যাপারে যত্নবান হবে প্রশাসন। এখানেই শেষ নয়, প্রস্তাবিত খনি এলাকায় এখনও যে জমির রেকর্ড সংশোধিত হয়নি সেগুলি দ্রুত সংশোধন করে এবং ওয়ারিশ সংক্রান্ত তথ্য আপডেট করার জন্য ফের শিবির করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা। দফতরের কর্তাদের কথায়, যে সমস্ত জমির রেকর্ড ঠিক ছিল না গত বছর পাঁচামি এলাকায় টানা শিবির করে প্রায় ১২০০ জমির রেকর্ড ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৮০টিরও বেশি ওয়ারিশ সংক্রান্ত জমির রেকর্ড ঠিক করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) শুভ্রজ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘‘এখনও যাঁরা বাকি রয়েছেন তাঁদের জন্যই শিবির হবে মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত খনি এলাকায়।’’
খনি গড়ার দায়িত্বে থাকা নোডাল এজেন্সি পিডিসিএল। মাটির নীচে কোথায় কত কয়লা আছে সেটা জানতে ড্রিল বা রোর হোল করে প্রাপ্ত সমীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করছেন সেই কাজ শুরু করার আগে এই প্যাকেজ ঘোষণা এলাকার মানুষের নাড়ি বোঝার কৌশল।