বালিকার মা বলেন, ‘‘গত বছর সরস্বতী পুজোর সময়ও ডিজের উৎপাতে ও অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল।’’ প্রতীকী চিত্র।
ডিজের প্রবল শব্দে জ্ঞান হারিয়েছিল কিশোরী। তার মা প্রতিবাদ জানাতে জরিমানা হল ৭ হাজার টাকা। পুরুলিয়া জেলার শ্যামপুর গ্রামের ঘটনা।
গত রবিবার সন্ধ্যায় শ্যামপুর গ্রামে সরস্বতী পুজোর বিসর্জন চলছিল। ডিজে বক্স এনে শোভাযাত্রায় নাচতে নাচতে যাচ্ছিলেন এলাকার এক দল যুবক। তবে তার প্রচণ্ড শব্দে অজ্ঞান হয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা মাহাতো (১৫)। মেয়ের অবস্থা দেখে স্থানীয় ক্লাবে ছুটে গিয়েছিলেন মা। গানবাজনার আওয়াজ কম করানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। অভিযোগ, তাঁর কথা কানে তোলেননি আনন্দে মাতোয়ারা যুবকরা। উল্টে অপমানিত হয়ে ফিরে আসেন ললিতা মাহাতো নামে ওই মহিলা।
ওই ঘটনার কথা শুনে থানায় খবর দিয়েছিলেন পুরুলিয়া যুক্তিবাদী সমিতির জেলা সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো। তার পর ডিজেও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মঙ্গলবার ললিতার বাড়িতে একদল যুবক চড়াও হয় বলে অভিযোগ। মহিলার কাছে তাঁদের দাবি, ডিজের বুকিং বাবদ ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সেটা দিতে হবে ওই বধূকেই! টাকা দেওয়ার সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়।
বুধবার এদিক ওদিক করে টাকা জোগাড় করেছিলেন ওই বধূ। তবে এই খবর শোনার পর আবার পদক্ষেপ করে যুক্তিবাদী সমিতি। লিখিত অভিযোগ করা হয় পুরুলিয়ার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। এর পর অভিযোগকারীদের থানায় ডেকে পাঠান হয়। এলাকা টহল দিতে পাঠানো হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারকে। এ নিয়ে ললিতা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে অসুস্থ। গত বছর সরস্বতী পুজোর সময়ও ডিজের উৎপাতে ও অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। পুরুলিয়া থেকে বোকারো, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ওর চিকিৎসা করিয়েছি। এখনও চিকিৎসা চলছে।’’ তাঁর সংযুক্তি, ‘‘আমি ডিজে বন্ধ করতে বলেছিলাম। বলেছিলাম আমার মেয়ে অসুস্থ। সেটা না করে এখন আমার কাছে ৭ হাজার টাকা চাইছে। আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা ভয়ে আছি।’’ মহিলার এ-ও অভিযোগ, পুলিশ পদক্ষেপ করার পরেও তাঁদের আর এক প্রস্থ হুমকি এসেছে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘ওই পরিবারের তরফে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবু এমন একটি ঘটনার কথা জানার পর পুরুলিয়া মফস্সল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।”