চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র
জঞ্জাল-সমস্যা পুরুলিয়া শহরের দীর্ঘদিনের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে শহরের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফেও শহর সাফসুতরো রাখতে না পারলে গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে জরিমানার সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।এই পরিস্থিতিতে ‘সুডা’ (স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি)-র নির্দেশমতো একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে শহরে আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার জোনাল কো-অর্ডিনেটর অণুদেব ঘোষ বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পর্যায়ক্রমে আমরা শহরের চারটি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছি। মার্চ থেকে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কোভিড পরিস্থিতির কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের ৩, ৫, ১৩ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আপাতত বাড়ি-বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, উচ্চ, মাঝারি ও নিম্ন আয়ের মানুষজনের সংখ্যা বেশি তেমন তিনটি ওয়ার্ড এবং বিভিন্ন আয়ের মানুষজন বসবাস করেন ও বাজার রয়েছে, এমন একটি-সহ মোট চারটি ওয়ার্ড বেছে নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে।
অণুদেববাবু জানান, ভারত সরকারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের আওতাধীন ‘সেন্ট্রাল পাবলিক হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং অর্গানাইজেশন’ ও ‘জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ’-এর নির্দেশিকা মোতাবেক কাজ শুরু হয়েছে। ‘পাইলট’ প্রকল্পের বিধি মেনে শহরের মোট ওয়ার্ডের ন্যূনতম দশ শতাংশ ওয়ার্ডে প্রথমে কাজ শুরু করার কথা। পুরুলিয়া পুর-এলাকায় ওয়ার্ডের সংখ্যা ২৩। সে হিসেবে শুরুতে চারটি ওয়ার্ডে কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে বাকি ওয়ার্ডগুলিতেও কাজ শুরু হয়ে যাবে।
চারটি ওয়ার্ডের সব বাড়ি, দোকান বা অফিসগুলিতে সবুজ ও নীল রঙের দু’টি করে বালতি দেওয়া হয়েছে। সবুজ বালতিতে পচনশীল ও নীল বালতিতে অপচনশীল আবর্জনা ফেলতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন তা সংগ্রহ করে শহর থেকে দশ-বারো কিলোমিটার দূরে পুরুলিয়া ২ ব্লকের জয়নগরের কাছে তা জমা করা হচ্ছে।অণুদেববাবু জানান, পচনশীল বর্জ্য দিয়ে জৈব সার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। অপচনশীল বর্জ্য আপাতত ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমা রাখা হচ্ছে। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অনুমোদিত কোনও সংস্থার মাধ্যমে তা ‘রিসাইক্লিং’ করা হবে। এ কাজে শহরের রাস্তাঘাটে যাঁরা কাগজ কুড়োন, তাঁদের কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে। পুরসভার প্রশাসক সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের আগেই সমস্ত ওয়ার্ডে কাজ শুরু করব। এ ক্ষেত্রে শহরবাসীর সহযোগিতাও কাম্য।’’
তবে আবর্জনা সংগ্রহের কাজ শুরু হলেও পুরসভার হাতে এখনও জৈব সার তৈরির কাজের ইউনিট বসানোর মতো জমি নেই। পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০এ) জাতীয় সড়কের পাশে জয়নগরের কাছে যে জমিতে কাজ শুরু হয়েছে, সেই জমি ভাড়ায় নিয়ে আপাতত কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। পুর-প্রশাসকের কথায়, ‘‘শহরের কাছে ‘এয়ারস্ট্রিপ’ হবে বলে ছড়রার জমি ব্যবহার না করতে বলা হয়েছিল। পরে সেই জমি মাসে ৫০ হাজার টাকা ভাড়ায় নিতে হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন ওই জমি কিনে পুরসভাকে দেবে বলে জানিয়েছে।’’