চার আক্রান্তের সঙ্গে একই বাসে

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইলামবাজারের নবগ্রাম, দেবীপুর, বেলোরা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের শ্রমিকদের একটি দল মাস কয়েক আগে কাজ করতে চেন্নাই গিয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে ওই শ্রমিকদের মধ্যে চার জন করোনায় আক্রান্ত হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইলামবাজার শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০৩:১৫
Share:

সতর্কতা: বোলপুরে কৃষি দফতরের ভবনে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। শনিবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী 

জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের হাত ধরে একটা সময়ে করোনা-সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলেও, পরে তাতে রাশ টানা গিয়েছিল। গত ক’ধিন ধরে অল্প হলেও বাড়তে শুরু করেছে করোনা-সংক্রমণ। এমন অবস্থায় চার জন করোনা আক্রান্তের সঙ্গে আরও ২৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক একই বাসে চেপে চেন্নাই থেকে ফিরলেন ইলামবাজারে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসতেই তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে সরকারি নিভৃতবাসে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু, এমন ঘটনায় হতবাক জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এমন কাজ ওই পরিযায়ী শ্রমিকেরা করলেন কী করে? এর ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইলামবাজারের নবগ্রাম, দেবীপুর, বেলোরা-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের শ্রমিকদের একটি দল মাস কয়েক আগে কাজ করতে চেন্নাই গিয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে ওই শ্রমিকদের মধ্যে চার জন করোনায় আক্রান্ত হন। চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তিও করানো হয় ওই চার জনকে। ওই শ্রমিকদের দাবি, হাসপাতালে কয়েক দিন রাখার পরে ওই চার জনকে হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সেই পরামর্শ না মেনে ওই চার জনের বাকি ২৪ জন শ্রমিক চেন্নাই থেকে একটি বাস ভাড়া করে শনিবার ইলামবাজারের ফেরেন। প্রশাসনের তরফ থেকে এই দিন বাসটিকে আটকানো হয়। ইলামবাজারের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর সরকারি নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই প্রত্যেকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।’’

Advertisement

ইলামবাজারের পাশাপাশি করোনা-সংক্রমণ ধরা পড়ছে বোলপুরেও। এ বার সংক্রমণ আটকাতে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বন্ধ করে দেওয়া হল শ্রীনিকেতন কৃষকবাজারে থাকা ব্লক কৃষি উপদেষ্টা কেন্দ্র ও তার লাগোয়া, ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তার (প্রশাসন) অফিস। সূত্রের খবর, উপদেষ্ট কেন্দ্রের এক আধিকারিক ও তাঁর ছেলে করোনায় আক্রান্ত হন। সে খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়ায় অফিস চত্বরে। কারণ, করোনার রিপোর্ট আসার আগে ওই অধিকারিক অফিসে ডিউটি করেছেন এবং বিভিন্ন জনের সংস্পর্শে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে। তড়িঘড়ি শুক্রবার থেকে এক সপ্তাহের অফিস বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কৃষক বাজারে থাকা উপদেষ্টা কেন্দ্রের গেটের সামনে অফিস বন্ধের বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়েও অফিস বন্ধের কথা জানিয়ে দেওয়া হয় ।

সংক্রমণের সম্ভাবনা এড়াতে লাগোয়া অফিসটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। আক্রান্ত আধিকারিকের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, শুক্রবার ও শনিবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে তাঁদের প্রত্যেকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। একই সঙ্গে এ দিন দমকলের কর্মীদের দিয়ে অফিস চত্বর জীবাণুমুক্ত করা হয়। বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা কোয়েল ব্রহ্ম বলেন, ‘‘আপাতত দু’টি অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। জীবাণুমুক্ত করার পরে সেগুলি খোলা হবে।’’ কৃষক বাজারে অবশ্য এ দিনও অনেককেই মাস্ক ছাড়া বেচাকেনা করতে দেখা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement