—প্রতীকী ছবি।
আড়াই দশকের চাকরির সময়ে শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেনি সরকার। গত নভেম্বরে অবসর গ্রহণের পরে পেনশন দিতে গিয়ে নথিপত্র যাচাইয়ে প্রশ্ন তুলেছিল প্রশাসন। ক্যানসার আক্রান্ত আরতিরাণী বিশ্বাসকে বলা হয়েছিল, ওই নথিপত্রের সমস্যার জন্যই তিনি পেনশন এবং অবসরকালীন প্রাপ্য পাবেন না। প্রাপ্য আদায়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছেন, ৯০ দিনের মধ্যে আরতিরাণীকে বকেয়া প্রাপ্য দিয়ে দিতে হবে। ক্যানসারে আক্রান্ত ওই প্রাক্তন শিক্ষিকা যাতে চিকিৎসার খরচ চালাতে পারেন, তার জন্য উত্তর ২৪ পরগনার জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক)-কে প্রভিশনাল পেনশন চালু করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং শিঞ্জিনী চক্রবর্তী জানান, আরতিরাণী বাংলাদেশে স্কুল এবং কলেজের লেখাপড়া শেষ করে এ দেশে আসেন। ১৯৮৪ সালে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পান। ১৯৯৮ সালে তিনি রাজারহাটের একটি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষিকা হিসেবে কাজ যোগ দেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে অবসর নেন। এত বছর চাকরির পরে কী ভাবে এক জন ক্যানসার আক্রান্ত প্রাক্তন শিক্ষিকার প্রাপ্য আটকানো যায়, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বৈশ্যের দাবি ছিল, মামলাকারী বাংলাদেশি নাগরিক। শিক্ষাগত নথি যাচাই না করে প্রাপ্য দেওয়া যাবে না।
বিচারপতি সিংহের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী এত বছর ধরে চাকরি করার সময়ে কর্তৃপক্ষ কী করছিলেন? নথি যাচাই না করেই চাকরি দেওয়া হয়েছে, তা মেনে নেওয়া কার্যত অসম্ভব। চাকরি শেষ হওয়ার পরে নথি যাচাইয়ের কোনও অর্থ নেই। তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, আরতিরাণীর ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের আচরণ বেআইনি এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।