উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন বিশ্বভারতীর এক প্রাক্তনী।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, ভারতরত্ন অমর্ত্য সেনকে যে ভাবে ‘নির্যাতন’ করা হচ্ছে, তা দেশদ্রোহের পর্যায়ে পড়ে বলে দাবি করে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন বিশ্বভারতীর এক প্রাক্তনী। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দেখে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন ধরেননি, এসএমএসেরও জবাব দেননি।
গত কয়েক মাস ধরে অমর্ত্য সেন ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিবাদ চলছে। একাধিক বার অমর্ত্য সেনকে ‘জমি দখলদার’ বলেও বেনজিরভাবে আক্রমণ করেছে বিশ্বভারতী। সম্প্রতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ একতরফা ভাবে বিতর্কিত জমি থেকে উচ্ছেদের নোটিস দিয়েছে অমর্ত্য সেনকে। তা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন অনেকেই। বিশ্বভারতী যে ভাবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে উচ্ছেদের নোটিস দিয়ে হয়রান করছে, তা ‘ভারতের লজ্জা’ বলে অভিযোগ করেছেন দেশের প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসুও। তবে বিশ্বভারতী তাদের অবস্থানে অনড়। ইদের দিনও বিশেষ উপাসনা থেকে নাম না করে অমর্ত্য সেনকে নিশানা করেন উপাচার্য।
এই পরিস্থিতিতে এ দিন দুর্গাপুরের বাসিন্দা, বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের প্রাক্তনী তৃষারানি ভট্টাচার্য শান্তিনিকেতন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পত্রে ওই প্রাক্তনী উল্লেখ করেছেন, “ঐতিহ্যবাহী বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একদা সান্নিধ্যে থাকা অমর্ত্য সেনকে দিনের পর দিন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে থাকা উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, কর্মসচিব অশোক মাহাতো, ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যরা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মর্যাদাহানি করছেন।’’
ওই প্রাক্তনীর অভিযোগ, ‘‘৯০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে বারবার ‘জমি কব্জাকারী’, ‘জমি দখলকারী’ বলে মর্যাদাহানি শুধু মর্যাদাহানি নয়, তাঁর মত বিশ্ববিখ্যাত শিক্ষাবিদকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করছেন বিদ্যুৎ, অশোক, মহুয়া-সহ বেশ কয়েকজন অসাধু ব্যক্তি, যাঁদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে শান্তিনিকেতন থানায়।’’
লিখিত অভিযোগে তৃষারানি আরও উল্লেখ করেছেন, ‘‘অমর্ত্য সেন শুধু নোবেলজয়ী নন, তিনি ভারতরত্নও। এক জন ভারতরত্নকে জমি দখলকারী, কব্জাকারী বলা দেশদ্রোহ।’’ তাই অবিলম্বে দেশদ্রোহ আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ওই প্রাক্তনী।