তারকেশ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
প্রয়াত হলেন পুরুলিয়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায়। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে পুরুলিয়ার নামোপাড়ায় নিজের বাড়িতে তিনি মারা যান। তাঁর ভাইপো রাজা চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘গত দু’-তিন দিন ধরে শরীর কিছুটা খারাপ ছিল। নিজেই মোটরবাইক চালিয়ে ডাক্তারের কাছে যান। গত রাতে শোয়ার আগে আমাকে পিঠে গরম তেল মালিশ করে দিতে বললেন। পরে আমার ঘুম ভাঙায় ডাকতে গিয়ে সাড়া পাইনি। তখনই আঁচ করি, বিপদ ঘটেছে।’’
তারকেশবাবুর মৃত্যু সংবাদে শহরে শোকের ছায়া নেমেছে। তিনি ছিলেন অকৃতদার। মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনের গণিতের শিক্ষকতা করেছেন। বাবা জগদীশ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন লোকসেবক সঙ্ঘের সক্রিয় কর্মী। তাঁর হাত ধরেই রাজনীতিতে আসা। লোকসেবক সঙ্ঘের পরে কংগ্রেসে এবং তারও পরে তৃণমূলে যোগ দেন। জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি ছিলেন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত। পুরুলিয়া পুরসভার সদ্য প্রাক্তন প্রশাসক সামিমদাদ খান জানান, ছ’বার কাউন্সিলর ও দু’বার পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন তারকেশবাবু।
শুক্রবার তেলকলপাড়া শ্মশানে শেষকৃত্যের আগে শহরের নামোপাড়ার বাড়ি থেকে তারকেশবাবুর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় জেলা তৃণমূলের কার্যালয়, শহর তৃণমূলের কার্যালয়, মানভূম ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন, পুরসভা ও আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে। পুরুলিয়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের বিনায়ক ভট্টাচার্য ও কৃষ্ণপদ বিশ্বাস, প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য পার্থপ্রতিম বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পুরসভার বর্তমান ও প্রাক্তন কাউন্সিলর, বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ পুরসভা চত্বরে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান।
বিনায়কবাবু বলেন, ‘‘২০০০ সালে আমি তারকেশবাবুর কাছ থেকেই দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলাম। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও সে ভাবে রাগতে দেখিনি। ঠান্ডা মাথায় কাজ করতেন। পুরসভার কাজকর্ম খুব ভাল বুঝতেন।’’ শহর তৃণমূল সভাপতি বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘আমাদের রাজনীতিতে হাতেখড়ি তারকেশবাবুর কাছেই। পুরসভার কাজকর্ম হাতে ধরে শিখিয়েছিলেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দা শ্রীমন সরকার বলেন, ‘‘কংগ্রেস, কংগ্রেস-সমর্থিত নির্দল— নানা ভাবে বার বার নির্বাচিত হয়ে পুরসভায় প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বর্ণময় চরিত্র তারকেশবাবুর। শহরের রাজনীতিতে একটি অধ্যায়ের শেষ হল।’’