নিয়মের তোয়াক্কা না করে এ ভাবেই বাসের ছাদে যাত্রী তোলা চলে বাঁকুড়ায়। নিজস্ব চিত্র
অনেক যাত্রী নিশ্চিন্তে বাসে চড়ে গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন। জানেনই না চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। তার উপরে ছাদেও বোঝাই যাত্রী। কোনও কোনও বাসের টায়ারের হাল এতটাই খারাপ, যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তো দূরের কথা বাসে নেই ভাড়ার তালিকা এবং সময়সূচি। সঠিক নিয়ম কানুন মেনে বাস চালানো হচ্ছে কি না তা দেখতে শনিবার অভিযানে নেমে এমনই নানা ঘটনা দেখলেন বাঁকুড়ার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা। বেনিয়মের অভিযোগে এ দিন মোট আটটি বাসের কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচিতে আরটিও-কে অভিযানে নামতে নির্দেশ দিয়েছিলাম।’’ ঘটনা হল, গত মাসেই তালড্যাংরায় বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক নবকুমার বর্মনের গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় একটি যাত্রীবাহী বাসের। ওই ঘটনায় অতিরিক্ত জেলাশাসকের গাড়ির চালক ও তাঁর নিরাপত্তারক্ষী এবং বাসের দুই মহিলা যাত্রীর। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, ওই দুর্ঘটার পরেই জেলার নিয়ম মেনে যানবাহন চলাচল করছে কি না তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে দুই জেলায় বাস দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। নতুন নয় বাস চলাচলে পরিবহণ সংক্রান্ত আইন ভাঙার অভিযোগ ওঠাও। কিছুদিন আগেই পুরুলিয়ার কাশীপুরে বাসের ছাদ থেকে পড়ে এক যাত্রী আহত হন। তার আগেও দুই জেলায় বাস থেকে পড়ে যাত্রী-মৃত্যুর নজির রয়েছে।
এ দিন সকাল থেকেই বাঁকুড়ার আরটিও-র নন-টেকনিক্যাল ইন্সপেক্টর শুভ্র জুঁই, অরুণ দাস ও টেকনিক্যাল ইন্সপেক্টর হৃষিকেশ জায়সবাল পুলিশ কর্মীদের নিয়ে অভিযানে নামেন। ধলডাঙার মোড়, পোয়াবাগান মোড়, হেভির মোড়ে বাস থামিয়ে বাসের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন তাঁরা। আরটিও সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়মকানুন মেনে চলাচল না করায় মোট আটটি বাসের কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছেন ওই আধিকারিকেরা। যার মধ্যে ৪টি বাসের চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। বেশ কিছু বাসের ছাদে যাত্রী তোলা হয়েছিল। কোনও বাসেই ভাড়ার তালিকা বা সময়সূচি রাখা ছিল না। কয়েকটি বাসের টায়ারের হাল খুবই খারাপ বলে জানা গিয়েছে।
আরটিও-র আধিকারিকেরা জানান, বাসের নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করতে টায়ারের ভূমিকা থাকে। টায়ারের মান খারাপ হলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আরটিও-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে না চালানোয় যে সমস্ত বাসের নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেই বাসগুলির মালিকদের ১৫ অগস্টের মধ্যে দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।’’