প্রতিবাদ মিশল বাউলের সুরে

কী নিয়ম এল রে ভাই এই মাটির দেশে/ জনগণের সর্বনাশ আর মোদিবাবুর মধু মাস... জয়দেবে বাউল ও লোকউৎসবের মঞ্চ থেকে মিনিট কয়েক আগেই নোট-পর্ব নিয়ে মোদী সরকারকে তুলোধনা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইলামবাজার শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:২৩
Share:

এগিয়ে চলো। মঙ্গলবার জয়দেবে বাউল ও লোক উৎসবের মঞ্চে ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

কী নিয়ম এল রে ভাই এই মাটির দেশে/ জনগণের সর্বনাশ আর মোদিবাবুর মধু মাস...

Advertisement

জয়দেবে বাউল ও লোকউৎসবের মঞ্চ থেকে মিনিট কয়েক আগেই নোট-পর্ব নিয়ে মোদী সরকারকে তুলোধনা করেছেন। প্রতিবাদের ঝড় তোলার ডাক দিয়েছেন। নেত্রীর তরফে বার্তা পেয়েই বাউলের সুরে গান বেঁধে গাইতে শুরু করে দিলেন লক্ষণদাস বাউল, ইন্দ্রনীল সেনেরা। মঞ্চে তখন আরও কয়েক জন বাউল। দেখেশুনে এগিয়ে এলেন মমতা। হাতে একতারা। মেলালেন গলাও।

মঞ্চ তো বটেই, সভা শেষের পরেও অনেককে বলতে শোনা গেল, বাউল অ্যাকাডেমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিনে এ ভাবে প্রতিবাদের সুর মিলে যাওয়ার থেকে ভাল বিজ্ঞাপন আর কি বা হতে পারত?

Advertisement

তবে শুধু কেন্দ্রের উদ্দেশে একের পর এক তির ছুড়ে যাওয়া নয়, রাঢ়ের মাটিতে এসে উন্নয়নের ফিরিস্তিও শোনালেন। মমতার কথায়, ‘‘এখানে তিনটে মাল্টি সুপার হসপিটাল হয়েছে। অনেক কর্মতীর্থ হয়েছে। পলিটেকনিক কলেজ হয়েছে। মাদার-চাইল্ড ল্যাব হয়েছে। রামপুরহাটে মেডিক্যাল কলেজও হচ্ছে। স্টেডিয়াম হচ্ছে।’’ কন্যাশ্রী, সবুজশ্রী, যুবশ্রীর সঙ্গে শোনালেন বৈতরিণী প্রকল্পের কথাও। কী হবে সেই প্রকল্পে, জানালেন তা-ও। মমতার কথায়, ‘‘গ্রামের শ্মশানগুলো ভাল করে করতে হবে। সব এমএলএ, এমপিদের বলব কাজটা শুরু করতে। আর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে জেলাশাসককে বলা হয়েছে সার্ভে করে আমাকে রিপোর্ট দিতে। যেটা নিয়ে গ্রামের শ্মশানগুলোর চারপাশটা আমরা বাঁধিয়ে দেব। এটার নামই হচ্ছে বৈতরণী স্কিম।’’

সভা শুরুর আগে উদ্যোক্তাদের কপালে ভাঁজ ফেলে দেয় অকাল-বৃষ্টি। এ দিন সকাল থেকেই ছিল মেঘলা আকাশ। পরে সঙ্গী হয় দফায় দফায় বৃষ্টি। প্রশাসন থেকে নেতামন্ত্রী সকলেই চিন্তিত ছিলেন জয়দেবে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান হলে হয়! বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি কিছু সময় বন্ধ হওয়ায় হাঁফছেড়ে বাঁচেন সকলেই। এ দিনের সভায় হাজির হলেন প্রচুর মানুষ। কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী কপ্টারে আসবেন। হেলিপ্যাড তৈরি রাখা হয়েছিল। কিন্তু দুপুরে ফের মেঘ ঘনিয়ে এল। বাতিল হল কপ্টারে জয়দেব আসা। মুখ্যমন্ত্রী এলেন বোলপুর থেকে সড়ক পথে। দুপুর দুটো নাগাদ ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যেই নামলেন মমতা। মঞ্চে উঠতে উঠতেই বেগ বাড়ল বৃষ্টির। মন্ত্রী আমলারা তখন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ব্যস্ত। উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী তখন ঘোষণা করছেন, কেউ বৃষ্টিতে ভিজবেন না। সাবধানে বাড়ি যাবেন। ইত্যাদি ইত্যাদি। ইতিমধ্যে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় বাঁশের ব্যারিকেডের বাইরে থেকে ছাউনির মধ্যে আসার চেষ্টা শুরু করলেন কেউ কেউ। দেখাদেখি অন্যেরাও। আসতে চাইছেন সকলে। ততক্ষণে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। ছাউনি দিয়েও ছুঁইয়ে পড়েছে জল। সে সব দেখে মুখ্যমন্ত্রীর কথা মতো মন্ত্রী-আমলা, পুলিশ কর্তারা ছুটে গেলেন সামাল দিতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement