দিলীপের সফরের পরে সিদ্ধান্ত বিজেপির

বহিষ্কৃত দুই প্রধান, ৫ নেতা ‘সাসপেন্ড’

শনিবার পুরুলিয়ার দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানান, জয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা বাদ্যকর ও রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নতুনডি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুচিত্রা বাউড়িকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০ ০২:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দলের দুই পঞ্চায়েত প্রধানকে বহিষ্কার করল পুরুলিয়া জেলা বিজেপি। শনিবার পুরুলিয়ার দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানান, জয়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা বাদ্যকর ও রঘুনাথপুর ২ ব্লকের নতুনডি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুচিত্রা বাউড়িকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি, এক নেতাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং চার নেতাকে ছ’মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হচ্ছে দল থেকে।
শুক্রবার পুরুলিয়ায় বিজেপির বিভিন্ন মণ্ডলের সভাপতিদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সূত্রের খবর, দলবিরোধী কাজ করলে বা দায়িত্ব নিয়েও কাজ না করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এ দিন বিদ্যাসাগরবাবু বলেন, ‘‘জয়পুর ও নতুনডি পঞ্চায়েতের দুই প্রধান দলের নির্দেশ মানছিলেন না। পঞ্চায়েত পরিচালনা নিয়েও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল। এ ধরনের বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠকে রাজ্য সভাপতি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন।’’
নতুনডি পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্মারকলিপি দিতে গিয়ে সেখানে প্রধান সুচিত্রাদেবীকে না পেয়ে পঞ্চায়েতে তালাও ঝুলিয়ে দেয় তৃণমূল। জয়পুর পঞ্চায়েতে বিজেপির দল নেতা মিলন মোদকের অভিযোগ, প্রধান অপর্ণাদেবী বিজেপির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই কাজ করছিলেন। পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনেও দলীয় নির্দেশ মানেননি।
এ দিন বিদ্যাসাগরবাবু বলেন, ‘‘মানুষ অনেক আশা নিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছেন। আমরা রাজ্যের বিরোধী দল বলে হয়তো মানুষের সমস্ত প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছি না। কিন্তু ভাল ব্যবহার করায় তো আপত্তি নেই।’’ তিনি জানান, দলের অভ্যন্তরে কিছু অভিযোগ ওঠায় ওই দুই প্রধানকে ‘শো-কজ়’ করা হয়েছিল। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে। নতুনডি পঞ্চায়েতের প্রধান সুচিত্রাদেবী এ দিন বলেন, ‘‘বহিষ্কারের ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। তবে পঞ্চায়েত পরিচালনায় আমি দলীয় সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করি।’’ মোবাইলে বারবার ফোন করেও অপর্ণাদেবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজের। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন। বিদ্যাসাগরবাবু জানান, হুড়া ব্লকের জগদীশ পতিকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আর পাড়া ব্লকের জয়দেব মণ্ডল, কাশীপুরের মনোজ কর্মকার, হরেন্দ্রনাথ মাহাতো ও মানবাজার ১ ব্লকের রানা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছ’মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধেও দলবিরোধী কাজের অভিযোগ উঠেছিল।
মনোজ কর্মকার বলেন, ‘‘দলের অভ্যন্তরে কিছু কাজকর্মের প্রতিবাদ করেছিলাম। প্রকৃত কর্মীদের নিয়ে আন্দোলনের দাবি তুলেছিলাম। তার মধ্যে দলবিরোধী কাজ কোনটা, জানি না।’’ হরেন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘আমি চিরকালই প্রতিবাদী। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলাম। দলের জন্য মিথ্যে মামলায় জেলও খেটেছি। শাসকদলের দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলনে নামার বিষয়টি কিছু নেতা মেনে নিতে পারেননি।’’ বাকি তিন নেতার সঙ্গে এ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো অবশ্য বলছেন, ‘‘এই বহিষ্কার থেকেই পরিষ্কার, বিজেপির গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement