ফিরহাদ হাকিম। — ফাইল চিত্র।
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দলের ‘ভোট লুট’ ও ‘সন্ত্রাস’ রুখতে দলীয় কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে দা-ত্রিশূল-ডান্ডা রাখার নিদান দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। বুধবার রামপুরহাট ২ ব্লকের বিষ্ণুপুরের ওই জনসভায় ‘লাঠির জবাব লাঠিতে’ বলে সুর চড়িয়েছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই জায়গাতেই পাল্টা জনসভা ডেকেছে তৃণমূল। আজ, শনিবার সেই সভা হবে। ওই সভায় পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, মলয় মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা।
ফিরহাদ একটা সময়ে দলের তরফে বীরভূমের পর্যবেক্ষক ছিলেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে বিষ্ণুপুরে সভা করবেন ফিরহাদ। সেখান থেকে তিনি সিউড়িতে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে তাঁর যাওয়ার কথা। সেখানে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন জেলার দুই সাংসদ, জেলার সমস্ত তৃণমূল বিধায়ক এবং জেলা কমিটির পদাধিকারীরা। মূলত পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে দলের স্ট্যারণকৌশিল নির্ধারণেই ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘কেষ্টদা (অনুব্রত মণ্ডল) এত দিন জেলার সমস্ত ভোট নিজের মতো করে সামলেছেন। কিন্তু, তিনি এখন জেলবন্দি। জামিনের কী হবে, এখনও স্পষ্ট নয়। তাই পঞ্চায়েত ভোটের কৌশল ঠিক করা হয়তো ওই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হবে।’’
বীরভূমের হাঁসন বিধানসভার অধীন রামপুরহাট ২ ব্লকের বিষ্ণুপুর রসমঞ্জরী হাইস্কুল মাঠে বুধবার বিজেপি সভা করেছিল। ওই সভায় ‘লাঠির জবাব লাঠিতে দিয়ে’ পঞ্চায়েতে ‘ভোট লুট’ রোখার নিদান দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিজেপি-র পাল্টা সভা করার জন্য এই হাইস্কুল মাঠই উপযুক্ত বলে দলের নেতারা মনে করেন। এর আগে দলের বুথ কর্মী সম্মেলন বা অঞ্চল ভিত্তিক মহিলা কর্মী সম্মেলনও রসমঞ্জরী হাইস্কুল মাঠে করা হয়েছে। ওই সভায় বিষ্ণূপুর অঞ্চলের পাশাপাশি লাগোয়া বুধিগ্রাম, মাড়গ্রাম ১ এবং ২ অঞ্চলের কর্মীদের বেশি করে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও রামপুরহাট ২ ব্লকের সাহাপুর অঞ্চলের কর্মীরাও উপস্থিত থাকবেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী অশোক চট্টোপাধ্যায় জয়ী হলেও বিষ্ণুপুর অঞ্চলে বিজেপির থেকে দু’হাজারের বেশি ভোটে তৃণমূল পিছিয়ে ছিল। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রামপুরহাট মহকুমা পর্যবেক্ষক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা ঘরে ঘরে দা-ত্রিশূল-ডান্ডা রাখার নিদান দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা ধরনের উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে গিয়েছেন। এই ভাবে এলাকায় অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি।’’ তাঁর দাবি, এলাকার মানুষের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও সজাগ ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেবেন তাঁরা। তাই বিজেপি যেখানে গুটিকয়ে কর্মী সমর্থক নিয়ে সভা করেছিল, সেই জায়গাতেই পাল্টা প্রকাশ্য সভা করা হবে।
তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা সভাপতির অনুপস্থিতিতে বিজেপি নেতারা এখানে এসে উস্কানিমূলক অনেক বক্তব্য রাখছেন। কিন্তু, বুথ স্তরে যাদের কর্মী নেই, সেই দল পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিছুই করতে পারবে না। জয় হবে উন্নয়নের।’’