দূষণ রুখতে পৌষমেলায় বন্ধ আতসবাজি

পরিবেশ দূষণ রুখতে আতসবাজি প্রদর্শন বন্ধ হল শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায়। মেলার অনুষ্ঠানসূচি থেকে তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কনফারেন্স হলে ৬ দিনের পৌষমেলার আয়োজন সংক্রান্ত বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৯
Share:

আলোচনা: পৌষমেলার বৈঠক। সোমবার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র

পরিবেশ দূষণ রুখতে আতসবাজি প্রদর্শন বন্ধ হল শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায়। মেলার অনুষ্ঠানসূচি থেকে তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কনফারেন্স হলে ৬ দিনের পৌষমেলার আয়োজন সংক্রান্ত বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উল্লেখ্য প্রতি বছর ২৪ ডিসেম্বর সন্ধেয় পৌষমেলার আতসবাজির প্রদর্শনে ভিড় জমত। আদালতের বিধিনিষেধের জেরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ছ’দিনই মেলা প্রাঙ্গণের মঞ্চে অনুষ্ঠান চলবে। তবে শব্দমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে অনুষ্ঠান মঞ্চটি ঘিরে দেওয়া হবে।

বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন কুমার দত্তের নেতৃত্বে এ দিন সকাল ১১টা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা পৌষমেলা নিয়ে বৈঠক হয়। আদালতের নির্দেশে মেলার পর্যবেক্ষক সুভাষ দত্ত, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের পক্ষে সম্পাদক অনিল কোনার, সবুজকলি সেন, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরা, মহকুমাশাসক শম্পা হাজরা, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার অম্লানকুসুম ঘোষ (বোলপুর), উপ-পুরপ্রধান নরেশচন্দ্র বাউড়ি, বিশ্বভারতীর অন্য আধিকারিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ মেনে শিশু-বান্ধব, পরিবেশ-বান্ধব পৌষমেলা হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। আতসবাজি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকছে। অনুষ্ঠান বাড়ছে। শব্দমাত্রার নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে।’’

Advertisement

পৌষমেলার দূষণ নিয়ে কলকাতা পরিবেশ আদালতে মামলা রুজু করেছিলেন সুভাষ দত্ত। সেই মামলার শুনানিতে বলা হয়, ভাঙা মেলায় দূষণ হয় সর্বাধিক। ভাঙা মেলা পুরোপুরি বন্ধ করতে এবং ব্যবসায়ীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ৬ দিনের পৌষমেলা করতে আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাতে সম্মতি দিয়ে দূষণ সংক্রান্ত একাধিক বিধি বেঁধে দেয় আদালত।

এ দিন বিশ্বভারতীর বৈঠকের পর জানা যায়, মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান হবে ছ’দিনই। সেখানে দূষণ রুখতে বোলপুর পুরসভা দু’বেলা মাঠে পর্যাপ্ত জল ছড়াবে। থাকবে প্রচুর ডাস্টবিন। মেলা প্রাঙ্গনে প্লাস্টিক, কাঠের উনুন, জেনারেটরের ব্যবহার নিষিদ্ধ। যানজট নিয়ন্ত্রণে মেলার কয়েক দিন শান্তিনিকেতন রোড দিয়ে বড় যান চলাচল বন্ধ করা হচ্ছে। মেলায় নজরদারির জন্য থাকবেন সাদা পোষাকের পুলিশ। থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার। থাকবেন বিশ্বভারতীর নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরাও।

বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, ছ’দিনের মেলার জন্য ‘প্লট বুকিং’য়ের টাকা বাড়তে চলেছে। যদিও, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অনুষ্ঠান বাড়ানোয় সেই খাতেও বেশি টাকা বরাদ্দ করতে হবে। সে কারণে মেলার আয়োজনে দমকল, বিদ্যুৎ বিভাগ, পৌরসভাকে কর কমানোর অনুরোধ জানান উপাচার্য। সুভাষবাবু বলেন, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দিয়ে পৌষমেলা করা হচ্ছে। এ বার মেলা অন্য বারের তুলনায় ভালো হবে বলে আশা করি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement