সুস্মিতা সেন। ছবি : সংগৃহীত।
সুস্মিতা সেনের প্রেমে এককালে হাবুডুবু খেয়েছেন তাঁর মহিলা ভক্তেরাও। তিনি পর্দায় থাকুন বা না-থাকুন তাঁর প্রতি তাঁর ভক্তদের প্রেমে ভাটা পড়েনি। কিন্তু সেই সুস্মিতা নিজে যখন প্রেমে পড়েছেন, তখন সেই প্রেম দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। বার বার এসেছে বিচ্ছেদ। বার বার এসেছে প্রেমও। কিন্তু প্রেমে তাঁকে যতটা উদ্বেল দেখিয়েছে, বিচ্ছেদে ততটাই শান্ত থেকেছেন সুস্মিতা। তিনি তারকা। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা, কাঁটাছেড়া কম হয়নি। সে সব সামলেও কী ভাবে সম্পর্কের ভাঙাগড়ার মানসিক চাপ সামলেছেন সুস্মিতা? বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সেই কঠিন সময়ের কথা বলেছেন অভিনেত্রী। সম্পর্ক সামলে রাখতে কী করা উচিত, সম্পর্ক ভাঙলে কী করতে হয়, ব্যক্তিগত জীবন যখন না চাইতেও প্রকাশ্যে এসে পড়ে, তখন কী করবেন, সবই শেখা যায় সুস্মিতার কাছ থেকে। মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ৪৮ পূর্ণ করলেন সুস্মিতা। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে নিজে শিখে বিভিন্ন সময়ে কী শিখিয়েছেন অভিনেত্রী?
১। সম্পর্কে থাকাকালীন যদি একে অপরের কথা বুঝতে অসুবিধা হতে শুরু করে, যদি এক জন আর এক জনকে ভুল বুঝতে শুরু করেন, তবে সেই সম্পর্ক শেষ হতে বাধ্য। ভুল বোঝাবুঝির কারণ থাকে মূলত একটাই। কোনও এক জন বা দু’জনই হয়তো স্পষ্ট করে নিজের কথা বলতে পারছেন না বা পারেননি। এ ক্ষেত্রে সম্পর্ককে বাঁচানোর উপায় থাকে একটাই। নিজের অনুভূতির কথা জোর দিয়ে বলুন। কারও নিজে থেকে বুঝে নেওয়ার উপর ছেড়ে দেবেন না।
রহমান শলের সঙ্গে সুস্মিতা সেন। ছবি: সংগৃহীত।
২। সম্পর্ক শব্দটা খুব সুন্দর একটা শব্দ। আমি আমার জীবনে অনেক রকম সম্পর্কে থেকেছি। অধিকাংশ সম্পর্কই আমাকে মানুষ হিসাবে আরও উন্নত হতে সাহায্য করেছে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, কোনও সম্পর্কই গ্যারান্টি কার্ড নিয়ে আসে না। আমি এমনও দম্পতি দেখেছি, যাঁরা ধুমধাম করে ২৫ বছরের দাম্পত্য উদ্যাপন করেছেন এবং তার দিন কয়েকের মধ্যেই আলাদা হয়ে গিয়েছেন। আমার মনে হয় সম্পর্কের বয়স যখন বাড়ে, তার সঙ্গে আমরাও পরিণত হই। প্রক্রিয়াটা কখনও দীর্ঘমেয়াদি হয়, কখনও দ্রুত থেমে যায়।
৩। ১৬ বছর বয়সে শুধু ডেটিং করাটাই আমার কাছে দারুণ ব্যাপার ছিল। এখন এক জন পুরুষ সঙ্গীর কাছে আমার অনেক কিছু চাওয়ার আছে। সেই চাওয়া আর পাওয়ার মিল হওয়া সহজ নয়। তবে পাওয়ার অঙ্ক মেলাতে যদি অপেক্ষা করতে হয়, করতে হবে।
৪। সঙ্গীর বিশ্বস্ততা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। কেউ কেউ ভাবেন শারীরিক ভাবে সঙ্গে থাকাটাই বিশ্বস্ততার একমাত্র প্রমাণ। কিন্তু আমি বলব আমার পাশে থাকা মানুষটি যদি মনে মনে ভাবে, আমাকে এর কাছে ফিরতে হবে, তবে তাকে কি বিশ্বস্ততা বলা যায়! মনে যদি অন্য কেউ থাকে, এবং শারীরিক ভাবে সে যদি আমার সঙ্গে থাকে, তবে তাকেও তো বিশ্বস্ততা বলা যায় না।
ললিত মোদী এবং সুস্মিতা সেন। ছবি: সংগৃহীত।
৫। আমি মনে করি আমি খুব সৌভাগ্যবান যে, আমার জীবনে সঙ্গী হিসাবে কিছু দারুণ পুরুষকে পেয়েছি। প্রাক্তন সম্পর্কগুলোকে আমি এ ভাবেই দেখি।
৬। যে কোনও সম্পর্কের শুরুতেই একে অপরকে জানা যায় না। প্রথম প্রথম সবই ভাল থাকে। সম্পর্ক যত পরিণত হয়, ততই একে অপরের আসল দিকগুলো প্রকাশ্যে আসতে থাকে। একে অপরকে বুঝতে বুঝতে যখন পরস্পরের প্রতি সম্পূর্ণ বিশ্বাস তৈরি হয়, তখনই বুঝবেন, এ বার আপনি সম্পর্ককে পরিণতি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
৭। আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কে যখনই কোনও সমস্যা হয়েছে, আমি দেখেছি, সবাই তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছে। অনেকে অনেক রকম মতামতও দিয়েছে। কিন্তু লোকে বললেই শুনতে হবে, কে বলেছে। আমি যখনই এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি এবং বিরক্ত হয়েছি, মনে মনে ভেবেছি, তোরা যা খুশি বলো, আমি শুনব। আমি আমার কাজ করব। আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলার অধিকার কারও নেই। সেটা শুনে গুরুত্ব দেওয়ারও প্রয়োজন নেই।