কারখানায় আগুন বড়জোড়ায়

সরকার অধিগৃহীত একটি সুতো তৈরির মিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। বড়জোড়ার আশুড়িয়া মোড়ের ‘বড়জোড়া কংসাবতী কো-অপারেটিভ স্পিনিং মিল’-এর গুদামে মঙ্গলবার সকালে আগুন লাগে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়জোড়া শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

পুড়ে গিয়েছে তুলো ও যন্ত্র। — নিজস্ব চিত্র

সরকার অধিগৃহীত একটি সুতো তৈরির মিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল। বড়জোড়ার আশুড়িয়া মোড়ের ‘বড়জোড়া কংসাবতী কো-অপারেটিভ স্পিনিং মিল’-এর গুদামে মঙ্গলবার সকালে আগুন লাগে। খবর পেয়েই দুর্গাপুর দমকল বাহিনীর তিনটি ইঞ্জিন কারখানায় এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় ওই গুদামে থাকা কারখানার দু’টি মেশিন এবং বেশ কয়েক টন তুলো নষ্ট হয়েছে। শ্রমিকেরা কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

কারখানা সূত্রের খবর, ১৯৯২ সাল থেকে সুতো তৈরি শুরু হয়। বর্তমানে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। প্রতিদিন গড়ে ৩-৪ টন সুতো উৎপাদন হয় এই কারখানায়। কারখানার আইএনটিটিইউসি ইউনিটের সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, কারখানায় অগ্নিনির্বাপক যে যন্ত্রগুলি রয়েছে, তার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে বহু আগেই। কারখানায় কোনও ইলেকট্রিশিয়ান নেই। কারখানার বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের তারগুলি বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে। যে কোনও সময় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাঁর বক্তব্য, “এ দিনের দুর্ঘটনার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজের দায় এড়াতে পারে না। আগে সতর্ক হলে এই ক্ষতির মুখে পড়তে হত না কারখানাটিকে।’’ একই সুরে কথা বলছেন কারখানার সিটু সম্পাদক নয়ন মণ্ডলও। তাঁর কথায়, “কিছু দিন আগেও ছোটখাটো শর্ট-সার্কিটের ঘটনা ঘটেছিল। তাতে তেমন কিছু ক্ষতি হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ সেই ঘটনার পরেও সচেতন হয়নি।’’ এ দিনের অগ্নিকাণ্ডও শর্ট-সার্কিট থেকে হয়েছে বলে অভিমত শ্রমিকদের একটা বড় অংশের।

এই কারখানার পরিচালন কমিটির মেয়াদ বেশ কয়েক বছর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ নতুন করে পরিচালন কমিটি গড়া হয়নি। শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানার ম্যানেজিং ডিরেক্টর চিত্তরঞ্জন মহাপাত্র দীর্ঘদিন হল কারখানায় আসেন না। এ দিন তাঁর মোবাইল নম্বর জোগাড় করে ফোন করা হলে এক ব্যক্তি ফোন ধরে জানান নম্বরটি ভুল। আগুন লাগার খবর পেয়ে এ দিন কারখানায় আসেন বড়জোড়ার বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী। তাঁর কাছে কারখানার শ্রমিকেরা কারখানার পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। কারখানার শ্রমিক শীতল চৌধুরী, নবকুমার জানা বলেন, “এর উপরেই আমরা নির্ভরশীল। কারখানাটির সঠিক দেখভাল হচ্ছে না। অবিলম্বে কারখানার দিকে রাজ্য সরকার নজর দিক।’’ বিধায়ক এই কারখানার সমস্যার কথা বিধানসভায় তুলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

কারখানার ম্যানেজার তাপস কুমার দাসের অবশ্য দাবি, পরিকাঠামো নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা-ও ঠিক নয়। কারখানায় ইলেকট্রিশিয়ানও আছেন। দিন সাতেক আগে যে শর্ট-সার্কিট ঘটেছিল, তা নেহাতই দীর্ঘক্ষণ মেশিন চলার কারণে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement