কলুপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাপজোক চলছে। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র।
বহুদিনের দাবি মেনে অবশেষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জীর্ণ শ্রেণিকক্ষগুলি ভেঙে নতুন শ্রেণিকক্ষ গড়ার কাজে হাত পড়ল। রবিবার কাজ শুরু হল দুবরাজপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলুপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এ দিন সকালে কাজ শুরু করার সময় হাজির ছিলেন কাজ শুরুর সময় হাজির ছিলেন দুবরাজপুর ব্লকের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পুলক চৌধুরী। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ নাজিরউদ্দিন ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এ দিনই অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিত খননের কাজ শুরু হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সমগ্র শিক্ষা মিশনের টাকায় দ্বিতল শ্রেণিকক্ষ হবে স্কুলে। ছাদের মাপ হবে ৪৬.২ বর্গমিটার। তার মধ্যে শ্রেণিকক্ষ ছাড়াও চওড়া বারান্দা ও সিঁড়ি থাকছে। বরাদ্দ ছিল ২৫ লক্ষ ৩৪ হাজার ৯২০ টাকা। যে ঠিকাদার বরাত পেয়েছেন তিনি ৩ শতাংশ কমে কাজটি ধরেছেন। দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে দেখে খুশি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। কারণ এর জন্য প্রচুর কাঠখড় পোহাতে হয়েছে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা প্রায় তিনশো। আছেন সাত জন শিক্ষক শিক্ষিকা। কিন্তু মূল সমস্যা ছিল পরিকাঠামোতেই। পাঁচটি শ্রেণি ও অফিস মিলিয়ে ৬টি ঘরের প্রয়োজন। সেখানে ব্যবহারযোগ্য ঘর ছিল তিনটি। তারই একটি ঘরে রয়েছে অফিস। কারণ স্কুলের একটি শ্রেণিকক্ষ ও অফিস ঘরের চাঙড় খসে পুরোপুরি অব্যবহার্য হয়ে পড়েছে। অন্য একটি শ্রেণিকক্ষের অবস্থাও শোচনীয়। দুর্ঘটনা এড়াতে বারান্দায় ক্লাস করাতে হচ্ছিল। বহু বার প্রশাসনের বহু জায়গায় দরবার করেও কাজ না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন স্কুলের সঙ্গে যুক্ত সকলে।
গত বছর এপ্রিলে দুবরাজপুর পুর-শহরের এই সরকারি প্রাথমিক স্কুলটিতে ঢুকেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ‘দিদির দূত’ তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্কুলে দাঁড়িয়ে কথা দিয়েছিলেন সমস্যা মেটানোর। কিন্তু স্কুলের তরফে সব আবেদন করার পর পাঁচ মাস কেটে গেলেও কিছু হয়নি। সেপ্টেম্বরে ওই সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হতেই নড়াচড়া শুরু হয়।
পুজোর সময় স্কুলের বিপজ্জনক ভবনটিকে ভেঙে ফেলা হয়। বরাদ্দের ব্যবস্থা, নকশা অনুমোদন, দরপত্র ডাকা ইত্যাদি করে কাজে হাত পড়তে এ বছরের ফেব্রুয়ারি হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারকে। কারণ এই স্কুলে পোলিং বুথ হয়। লোকসভা নির্বাচনের আগে দ্বিতল না হোক যাতে একতলা নির্মিত হয় সেটাই প্রধান লক্ষ্য প্রশাসনের। শিক্ষক মিহির গড়াই, অরুণ খান বলছেন, ‘‘খুদে পড়ুয়ারা নিরাপদে পাঠ নিতে পারবে ভেবে স্বস্তি হচ্ছে।’’
আশিস বলছেন, ‘‘দেখেছিলাম সত্যিই খুব খারাপ অবস্থায় ছিল ওই স্কুল। বাচ্চাদের বিপদ ঘটতে পারে দেখে এডিএমকে তখনই জানাই। পাঁচ মাস পরে যখন শুনলাম কাজ হয়নি তখন ফের আমি এডিএমকে বলি। রাজ্য সরকার যে তৎপর আছে, এটা তার প্রমাণ।’’