আঘরপুরের এই সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পথে। নিজস্ব চিত্র
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত-সহ অনেক চিত্র পরিচালকেরই পছন্দের জায়গা পুরুলিয়ার আঘরপুর। এখানেই ‘উত্তরা’, ‘জানালা’-র মতো ছবির শ্যুটিং হয়েছে। এমন আরও অনেক নামী বাংলা ছবি ও তথ্যচিত্রের শ্যুটিং-এর জায়গা আঘরপুর এখন নষ্ট হওয়ার পথে।
এই জায়গায় প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে মেলাও বসে। পুরুলিয়ার মানুষের এই জায়গাটির সঙ্গে আবেগ, বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে এই জায়গাটিতে শুরু হয়েছে নির্মাণকাজ। আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জেলার শিল্পী ও শিল্পপ্রেমীরা। সম্প্রতি নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়ে জেলাশাসকের কাছে আবেদনও করেছেন কয়েক জন শিল্পী।
পুরুলিয়ার শিল্পী দেবরাজ মাহাতো বলেন, ‘‘এই জায়গাটি পুরুলিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী জায়গা। কিন্তু এই জায়গাটির করুণ দশা দেখে আমরা ব্যথিত। কে বা কারা এখানে নির্মাণ কাজ করছেন, সেটাও স্পষ্ট নয়। কারণ, সেখানে কোনও বোর্ড নেই।’’
এই আঘরপুরের দৃশ্য ধরা রয়েছে প্রচুর সিনেমায়। পুরুলিয়া জেলার জয়পুর ব্লকের আঘরপুর ডুংরি জেলার একটি অন্যতম চলচ্চিত্র ‘শ্যুটিং স্পট’। এখানে বহু সিনেমার শ্যুটিং হয়েছে। যেমন বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের চলচ্চিত্র জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত ‘উত্তরা’ ছবির থেকে শুটিং স্পট এটিই। এ ছাড়াও ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘জানালা’, ‘কাঁটাতার’, ‘দুই পৃথিবী’, ‘বেদেনি’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘যোদ্ধা’, ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’ ইত্যাদির মতো বহু নজরকাড়া সিনেমার শ্যুটিং হয়েছে এখানে। মহাশ্বেতা দেবীর গল্প অবলম্বনে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের পরিচালনায় ৬টি টেলিফিল্মের শ্যুটিং হয়েছে আঘরপুরে।
পুরুলিয়ার এই জায়গায় বহু মিউজিক ভিডিয়ো, শর্ট ফিল্ম-এর শ্যুটিংও হয় এখানে। কিন্তু বর্তমানে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জায়গাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। তাই ক্ষোভে ফুঁসছেন অনেকে। কিঙ্কর মাহাতো, পিন্টু মাহাতোরা জানান, ‘‘আমাদের চোখের সামনে জায়গাটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অথচ, সরকার নীরব। যাঁরা নির্মাণকাজ করছেন, তাঁরাও কিছু বলছেন না যে, কে বা কারা কী জন্য এই নির্মাণ করছেন।’’