Poush Mela 2023

মেলা ও পৌষ উৎসবে জমাটি শান্তিনিকেতন

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার পরে প্রদীপ প্রজ্জলন ও বাউল মঞ্চে বাউল গানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন আশ্রমিক কল্পিকা মুখোপাধ্যায় ও আশ্রমিক সুনীতিকুমার পাঠক।

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ 

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:০০
Share:

শান্তিনিকেতনে ছাতিমতলায় উপাসনার মধ্যে দিয়ে শুরু হল পৌষ উৎসবের আছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিক।রবিবার সকালে। ছবিঃ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

বিশ্বভারতী না করলেও জেলা প্রশাসন আয়োজন করেছে বিকল্প পৌষমেলার। তিন বছর পরে তা হচ্ছে পূর্বপল্লির মেলার মাঠেই। অন্য দিকে, চিরাচরিত প্রথা মেনে এ বারও ৭ পৌষ ব্রহ্ম উপাসনার মধ্যে দিয়ে পৌষ উৎসব উদ্‌যাপন করল বিশ্বভারতী। এই দুই উৎসবকে ঘিরে রবিবার জমজমাট থাকল বোলপুর-শান্তিনিকেতন।

Advertisement

এ দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে জেলাশাসকের ফোনের সাহায্যে বক্তব্য রেখে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীর সমস্ত আশ্রমিককে আমি আমার প্রণাম ও অন্যদের শ্রদ্ধা জানাই। সর্তকতা, সাবধানতা, ভালবাসার সঙ্গে বিশ্বভারতীর সার্বিক ঐতিহ্য মেনে এই মেলা আপনারা করুন। সকলকে অভিনন্দন রইল।” ভার্চুয়ালি উদ্বোধনে নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকেও সম্মাননা জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার পরে প্রদীপ প্রজ্জলন ও বাউল মঞ্চে বাউল গানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন আশ্রমিক কল্পিকা মুখোপাধ্যায় ও আশ্রমিক সুনীতিকুমার পাঠক। ছিলেন ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেন, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়-সহ সমস্ত বিধায়ক ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা

Advertisement

বিশ্বভারতী এ বার মেলা না করলেও জেলা প্রশাসনের আবেদনে তারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এ দিন প্রশাসনের কর্তারা মেলার বেশকিছু স্টল উদ্বোধনের সঙ্গে মেলা চত্বর ঘুরে দেখেন। মেলায় এ দিন তৃণমূলের স্টলও উদ্বোধন করা হয়।

তিন বছর পর পুরনো জায়গায় মেলা ফিরে আসায় সকলেই খুশি। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘এই মেলা মহর্ষির হাত ধরে শুরু হয়েছিল, তাই মেলা বন্ধ হওয়া উচিত নয়। মেলা আবার শুরু হওয়ায় আমরা আনন্দিত।” সবুজকলি সেন বলেন, “ বিশ্বভারতী এ বছরও মেলা করেনি। সে জন্য খারাপ লাগছে। তবে রাজ্য সরকার এত কম সময়ের মধ্যে যেভাবে মেলা পরিচালনা করেছেন তাতে আমরা খুশি। ” এই মেলায় কি সেই পুরনো পৌষমেলার আবহ পাওয়া যাচ্ছে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘অনেকটাই।”

বিশ্বভারতীর তরফে এ দিন চিরাচরিত প্রথা মেনে ভোরবেলায় বৈতালিক ও ছাতিমতলায় ব্রহ্ম উপাসনার মধ্য দিয়ে পৌষ উৎসবের সূচনা করা হয়। উপাসনায় যোগ দেন বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয়কুমার মল্লিক, বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, প্রাক্তনী ও আশ্রমিকেরা। এ ছাড়াও জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ-সহ অনেকেই ছিলেন।

উপাসনা শেষে ‘আগুনের পরশমণি’ গানের মধ্য দিয়ে উদয়নগৃহের সামনে সকলে এ দিন সমবেত হন। দীর্ঘদিন পর এমন অনুষ্ঠানে আশ্রমিক, প্রাক্তনী থেকে শুরু করে পর্যটকেরা সামিল হতে পেরে সকলেই খুশি। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যেখানে রবীন্দ্রনাথ উপাসনায় বসেছিলেন সেই জায়গায় আজ আমি মহর্ষি ও রবীন্দ্রনাথের কৃপায় উপাসনায় বসেছিলাম। ৭ পৌষ শুদ্ধ থাকুক, পূর্ণ থাকুক, শান্তিনিকেতন পূর্ণ হোক।’’ পৌষমেলা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পৌষ উৎসব বিশ্বভারতীর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement