বর্ষায় প্রতিবেশীর ঘর ভেঙে গিয়েছিল। সহায়-সম্বলহীন দেখে সেই প্রতিবেশীকে টালির ছাউনি দেওয়া একটি মাটির ঘর মাসখানেকের জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন এক বিধবা প্রৌঢ়া। তারপর মাস তো বটেই, ঘুরেছে বছর। কিন্তু মেলেনি ঘর! তার উপরে যোগ হয়েছে নতুন উপদ্রব।
বিষ্ণুপুর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনসাতলা মাঝিপড়ার বাসিন্দা অনিমা করের অভিযোগ এমনটাই। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিবেশী অলোক মাঝি এখন ওই ঘরে অবৈধ মদের কারবার ফেঁদে বসেছে। ঘর ছাড়তে বললে আমাকে, আমার প্রতিবন্ধী ছেলে সৌমেনকে মারধর করছে।’’ তারপরেও ফল হয়নি বলে তাঁর দাবি। এই মর্মে পুলিশের কাছেও অনিমাদেবী অভিযোগ করেছেন। তারপরও ফল হয়নি বলে অভিযোগ।
অনিমাদেবী শুরুতে স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তাতে কাজ হয়নি। এরপরে থানায় এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ও মহকুমাশাসককে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো ভয়ে ভয়ে কাটছে আমাদের।’’ পদক্ষেপ করা হল না কেন?
বিষ্ণুপুর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমি দু-পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু বাড়িটি জবরদখল করে থাকা অলোক ও তাঁর ছেলের একগুঁয়েমি মনোভাব দেখে মীমাংসা করা যায়নি।’’ এমন কথায় বিষ্মিত এলাকার অনেকেই। এঁদেরই এক জন বলছেন, কারও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদত না থাকলে এ ভাবে জবরদখল করে বসে থাকা যায় নাকি! আর এক জনের কথায়, ‘‘প্রতিপক্ষ দুর্বল বলেই পেয়ে বসেছেন অলোক।’’
কিন্তু, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) পার্থ আচার্যের কথায়, ‘‘ওই বৃদ্ধার অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।’’ পুলিশের এক কর্তা এ বার পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। এত দিন কেন হয়নি, তার কোনও সদুত্তর দিতে চাননি তিনি।
এ দিকে, যাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ সেই অলোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বেশ কয়েকবার এলাকায় গিয়েও অলোক বা তাঁর ছেলে বুল্টুর দেখা মেলেনি।