মেয়েকে কুপিয়ে খুনে সাজা বাবার

মেয়েকে কুপিয়ে খুন করার দায়ে বাবাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিল আদালত। সাজাপ্রাপ্ত রাজেশ যাদবের বাড়ি আদ্রার বেনিয়াসোল এলাকায়। শনিবার রঘুনাথপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী এই রায় দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০২:২৫
Share:

মেয়েকে কুপিয়ে খুন করার দায়ে বাবাকে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দিল আদালত। সাজাপ্রাপ্ত রাজেশ যাদবের বাড়ি আদ্রার বেনিয়াসোল এলাকায়। শনিবার রঘুনাথপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি চক্রবর্তী এই রায় দিয়েছেন।

Advertisement

সরকার পক্ষের আইনজীবী অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। ওই রাতে রাজেশ মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ফেরে। স্ত্রী সরিতাদেবীর সঙ্গে কোনও কারণে বিবাদ বাধে তার। সেই সময় পকেট থেকে ছুরি বের করে স্ত্রীর উপরে চড়াও হয় সে। স্ত্রীর হাতে ছুরির কোপ মারে। চিৎকার-চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায় রাজেশের বড় মেয়ে আঠারো বছরের টুইঙ্কলের। বাবাকে বাধা দিতে যায় সে। স্ত্রীকে ছেড়ে রাগের বশে মেয়ের গলায় ওই ছুরি দিয়েই পরপর কোপ মারে রাজেশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় টুইঙ্কলকে রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। সেখানে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে জানান। ওই ঘটনার পরেই অবশ্য বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল রাজেশ। সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, খুনের ঘটনার পরের দিনই সরিতাদেবী স্বামীর বিরুদ্ধে মেয়েকে খুন করার অভিযোগ দায়ের করেন আদ্রা থানায়। পুলিশ ওইদিনই রাজেশকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকেই খুনে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার হয়। গ্রেফতারের দু’মাসের মধ্যে রাজেশের বিরুদ্ধে আদালতে পুলিশ চার্জশিট জমা দেয়। তারপর থেকে আর ছাড়া পায়নি সে। জেলবন্দি অবস্থাতেই চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে বিচার শুরু হয়।
সরকার পক্ষের আইনজীবী অমলেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এই মামলার উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে বিচার চলাকালীন সময়ে রাজেশের স্ত্রী সরিতাদেবী ও তাদের ছোট মেয়ে নীতি যাদব তার বিরুদ্ধে টুইঙ্কলকে খুন করার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে সাক্ষী দিয়েছিলেন। মূলত এই দু’জনের সাক্ষ্যের জেরেই বিচারক অভিযুক্তকে যাবজ্জীবনের সাজা দিয়েছেন।” রাজেশ আবার পুলিশের খাতায় দাগি অপরাধী হিসাবেই পরিচিত। ডাকাতি, খুনের মতো অন্তত ১২টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রায় শুনে সরিতা বলেন, ‘‘স্ত্রী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়াটা মানসিক যন্ত্রণার। তাই প্রথম দিকে দ্বিধা ছিল। কিন্তু বড় মেয়েকে চোখের সামনে যে ভাবে ও খুন করেছিল, সেটা মনে পড়ে যেতেই চেয়েছিলাম, ওর যেন যথাযথ শাস্তি হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement