দিনভর এমনই রইল আকাশ। ঝালদার ইচাগে। ছবি: দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
আগের দিন বিকেল থেকে বৃষ্টির পরে, বুধবার দিনভর মেঘলা রইল আবহাওয়া। এই আবহাওয়ায় আলু ও নানা আনাজ চাষের ক্ষতি হবে
বলে চাষিদের একাংশের দাবি। যদিও কৃষি দফতরের আশ্বাস, যা বৃষ্টি হয়েছে, তাতে আনাজ চাষে তেমন ক্ষতি হবে না।
পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার জেলার সমস্ত ব্লকেই বৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পুরুলিয়ায় গড় বৃষ্টি হয়েছে ১১.২ মিলিমিটার। রঘুনাথপুর, ঝালদা, বান্দোয়ান, কাশীপুর এলাকার আনাজ চাষিদের একাংশের আশঙ্কা, মঙ্গলবারের ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও বুধবার মেঘলা আকাশের প্রভাব আনাজ চাষে পড়বে।
ঝালদার চাষি নির্মল কুইরির দাবি, ‘‘কুড়ি ডেসিমেল জমিতে গাজর চাষ করেছিলাম। সদ্য চারা বড় হচ্ছিল। বৃষ্টিতে সে চাষে ভালই ক্ষতি হয়েছে।’’ বান্দোয়ানের লতাপাড়া গ্রামের চাষি সুশীল মাঝি, সুকুমার গরাইদের দাবি, ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে আলু ও টোম্যাটো চাষে। কয়েক বিঘা জমিতে আলু ও ফুলকপি চাষ করেছেন সুশীল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আলু ও কপির পাতায় ছোপ ধরতে শুরু করছে।
দ্রুত রোদ না উঠলে, সমস্যা হবে ফলনে।’’ সুকুমার জানান, তিনি কয়েক বিঘা জমিতে টোম্যাটো লাগিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘জমিতে কিছুটা জল জমেছে। মাটিতে থাকা টোম্যাটোর বেশিরভাগই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।’’ বান্দোয়ানের বেকো গ্রামের চাষি প্রদীপ দাস জানান, নভেম্বরের বৃষ্টিতে লাউ চাষ পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ বার দ্রুত রোদ না উঠলে, আলুর ক্ষতি হতে পারে।’’
চাষিদের দাবি, রোদ না উঠলে, ফসলে রোগপোকার আক্রমণ বাড়বে। কৃষি দফতর সূত্রে অবশ্য জানা যায়, আজ, বৃহস্পতিবারও সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। উদ্যানপালন দফতরের অবশ্য আশ্বাস, যে সব চাষি আগে থেকে জমিতে নালা কেটে রেখেছিলেন, তাঁদের আনাজ চাষে ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটা কম। বৃষ্টির জল নালা দিয়ে বয়ে যাবে, জমিতে জমবে না। নিতুড়িয়ার আনাজ চাষি কালোসোনা মণ্ডল, রঘুনাথপুরের সুভাষ বাউরিরা জানাচ্ছেন, নালা কেটে রাখার কারণে জমিতে জল জমেনি। তবে তাঁদেরও আশঙ্কা, ফের বৃষ্টি হলে এবং দ্রুত রোদ না উঠলে, ফলনে রোগপোকার আক্রমণ বাড়তে পারে।
পুরুলিয়ার সহ-কৃষি আধিকারিক সুশান্ত দত্ত বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে, এমন তথ্য ব্লকগুলি থেকে এখনও আসেনি।’’ তবে মেঘলা আবহাওয়া থাকলে চাষিদের ফসলের উপরে নজর রেখে প্রয়োজনে ছত্রাকনাশক দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞেরা।