এমনই অবস্থা শৌচালয়ের। কোটশিলার কুমারডি টোলায়। নিজস্ব চিত্র।
শৌচ করতে বেরিয়ে হাতির মুখোমুখি হওয়া এবং তার পরে নির্মম মৃত্যু।
রবিবার ভোরে ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল পুরুলিয়ায়। শৌচে বেরিয়ে হাতির মুখোমুখি পড়ে প্রাণ হারাতে হল কোটশিলা বনাঞ্চলের সিমনি বিটের ডিমু গ্রাম লাগোয়া কুমারডি টোলার বাসিন্দা বছর সাতাশের মমতা কুমারের। ঘটনার পরে সরকারি তরফে গড়া এলাকার অধিকাংশ পরিবারের শৌচালয়ের হাঁড়ির হালের ছবিটা ফের ‘বেআব্রু’ হয়েছে, দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। প্রশাসনের একাংশের যদিও দাবি, শৌচালয় ব্যবহার নিয়েও এলাকার অনেকের মধ্যে গাছাড়া
ভাব রয়েছে।
বাড়িতে সরকারি তরফে শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। তবে তা এমনই যে, ব্যবহার করা যায় না। কাজ এত নিম্ন মানের যে, কিছু দিন পরেই সেগুলি জীর্ণ হয়েছে। ব্যবস্থা নেই জলেরও। এমনই অভিযোগ কুমারডি টোলার একাধিক বাসিন্দার। ছবিটা আলাদা নয় অকালে প্রাণ হারানো মমতার বাড়িতেও। তাঁর ভাই তাপসের দাবি, “ঘরে থাকা শৌচালয়টি ব্যবহারের অযোগ্য। ভাঙাচোরা বললেও কম বলা হয়। শৌচ করতে বাইরে না গেলে দিদিকে হয়তো এ ভাবে মরতে হত না।” তাঁদের পড়শি গুরুপদ কুমারের আরও অভিযোগ, “শৌচালয় বানিয়ে ঠিকাদারদের পকেট ভরেছে ঠিকই। কিন্তু একটা শৌচালয়ও ব্যবহার করা যায় না। আমরা মাঠেই যাই।”
বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে, হাতির হানায় জেলায় যতগুলি মৃত্যু হয়েছে, তার বেশির ভাগই বাইরে শৌচ সারতে গিয়ে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কথা মানছে পুরুলিয়া বনবিভাগ। ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “নির্বাচনী বিধির জন্য এই মুহূর্তে সে ভাবে কিছু
হয়তো করা যাবে না। ভোটপর্ব মিটলে এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হবে।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে যদিও দাবি, ইতিমধ্যে ব্লক এলাকায় সরকারি তরফে ৩৫২টি শৌচালয় বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শৌচালয়ের নির্মাণ নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখা হবে জানিয়ে বিডিও (ঝালদা ২) অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, “এর সঙ্গে সরকারি তরফে শৌচালয় ব্যবহার নিয়ে প্রচারও চলছিল। নির্বাচনী-বিধি চালু থাকায় আপাতত তা বন্ধ। ভোটপর্ব মিটলে ফের প্রচারে নামা হবে।”