রাজনগরের কানমোড়া গ্রামের বাগানে ফলেছে মিয়াজ়াকি। নিজস্ব চিত্র।
দুবরাজপুরের পরে এ বার রাজনগরেও দেখা গেল আপেলের মতো টুকটুকে লাল আম। সেটি ‘মিয়াজ়াকি’ কি না সরেজমিনে খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন জেলা কৃষি আধিকারিকেরা।
রাজনগরের ভবানীপুর পঞ্চায়েত এলাকার কানমোড়া গ্রামের ফল চাষি মান্নান খানের দাবি এটি মিয়াজাকিই। তিনি জাপানি এই আম চারা বাংলাদেশ থেকে আনিয়েছিলেন চার বছর আগে। আমের সঙ্গে ওই চাষির ছবিও ছড়িয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমে।
দুবরাজপুরের ১১নম্বর ওয়ার্ডের গউসিয়া মসজিদে হওয়া মিয়াজ়াকি আমের খবর জানাজানি হওয়ার পরের দিন একটি আম দশ হাজার ছ’শো টাকায় নিলাম ডেকে বিক্রি হল। সেই খবর সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যমের দেখার পর থেকেই নিজের বাগানের আমগুলি নিয়েও উৎসাহী হয়েছেন মান্নান।
মান্নান বলেন, ‘‘বছর চারেক আগে জমিতে ভাল জাতের আম লাগানোর উদ্দেশ্যে কলকাতার একটি নার্সারির সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওই নার্সারি বাংলাদেশ থেকে জাপানের একটি প্রজাতির ১০টি আম চারা আমাকে এনে দিয়েছিল। প্রতিটির দাম পড়েছিল এক হাজার টাকা করে। চারটি চারা বেঁচেছে।’’
মান্নান এমনিতে বিভিন্ন ফলের গাছের সঙ্গে ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। তাতে লাভও হয়েছে ভালই। পাশেই এক ফালি জমিতে এই আম চারাগুলো বসিয়েছিলেন। যাতে এ বারই প্রথম ফল এসেছে। ডিম্বাকৃতি আমগুলি পরিণত হতেই প্রথমে লালচে বেগুনি ও পরে টুকটুকে লাল রং হয়েছে। অনেকেই আপেল ফলেছে বলে ভুল করছেন, জানান প্রতিবেশীরাও। প্রথমে নাম না জানলেও ইন্টারনেট ও ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া জেলার একটি টিভি চ্যানেলে এই আমের বিজ্ঞাপন দেখে মিয়াজ়াকির কথা জানতে পারেন মান্নান। দুবরাজপুরের মসজিদে আমের ফলন ও চড়া দরে নিলামের খবর তাঁকে বাড়তি উৎসাহ জুগিয়েছে বলে জানান ওই ফল চাষি।
জেলা কৃষি ও উদ্যানপালন দফতরের কর্তাদের মতে, রাজনগরে আম চাষের আদর্শ পরিবেশ রয়েছে। ব্লক জুড়ে প্রচুর আম বাগান। নানা প্রজাতির আম গাছ রয়েছে। যে ছবি সামনে এসেছে তাতে আমটি মিয়াজ়াকি প্রজাতির হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে অনেক সময় আমের আর এক বিদেশি প্রজাতি ‘আমেরিকান রেড পালমার’-এর সঙ্গে মিয়াজ়াকিকে গুলিয়ে ফেলা হয়। আমগুলি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। রাজনগরের ওই ফল চাষি জানান, ফলের চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে তিনি থাকলেও বাগানটি এখন কলকাতার একজন লিজ় নিয়েছেন। ফল বিক্রি হলে লাভের বড় অঙ্ক তাঁরই।