প্যাকেটে ভরা হচ্ছে গুড়ের বরফি। ওন্দায়। নিজস্ব চিত্র।
খেজুর গুড় থেকে নানা সামগ্রী তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে বাঁকুড়ার ওন্দার এক সমবায়। দুর্গাপুরে ‘সিনার্জি অ্যান্ড বিজ়নেস ফেসিলিটেশন কনক্লেভ’-এর মঞ্চে শিল্পোদ্যোগীদের নজর কাড়ল সেই সমবায়ের তৈরি গুড়ের বরফি।
বুধবার পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার শিল্পোদ্যোগীদের নিয়ে ওই ‘সিনার্জি’ আয়োজিত হয়। ‘বাঁকুড়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর সরকার বলেন, ‘‘বাঁকুড়ার একটি সমবায়ের তৈরি গুড় অন্য জেলার ব্যবসায়ীদেরও নজর কেড়েছে। বাঁকুড়ার গুড়ের ভাল বিপণনের সুযোগ রয়েছে।’’
প্রবীরবাবু জানান, ওন্দার জনা তিরিশ ক্ষুদ্র উদ্যোগী এই সমবায় তৈরি করেছেন। সেটির মূল উদ্যোক্তা ও পরামর্শদাতা দীপক ঘোষ বলেন, ‘‘মূলত, ওন্দার আমবেড়ে এলাকায় এটি গড়ে উঠেছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ৯০ জন রস সংগ্রহ, গুড় ও বরফি তৈরিতে যুক্ত হয়ে আয় করছেন। এই গুড় তৈরির জন্য এলাকায় কুড়িটি সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলিতে কাজ করছেন আশি জন স্থানীয় বাসিন্দা।’’ তিনি জানান, প্রায় আড়াইশো খেজুর গাছ প্রতি এক-একটি কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। মরসুম শুরুর আগে, গাছের মালিকদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। কেন্দ্রগুলিতে রস থেকে গুড় তৈরি হয়। বরফি বা পাটালি তৈরি হয় মূল কেন্দ্রে। সেখানে পাঁচ জন দক্ষ শ্রমিক ও পাঁচ জন সহযোগী কাজ করেন। সমবায় তাঁদের কাছে প্রতি কেজি গুড় ৭০ টাকা ও প্রতি কেজি বরফি ১০০ টাকা দরে কেনে। সেখান থেকেও তাঁদের লাভ হয়। এর পরে গুড় ও বরফি বিপণন করা হয়।
দুর্গাপুরে ‘সিনার্জি-’তে যোগ দেওয়া ওই সমবায়ের সদস্য পিন্টু মণ্ডল, অজিত মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত উদ্যোগে মহাজনদের গুড় দিলে কম দাম মেলে। সমবায় করে অনেক বেশি লাভ হচ্ছে।’’ আর এক সদস্য তিলক মুর্মু বলেন, ‘‘এখন প্রতিদিন তিনশো কেজি বরফি ও কুড়ি কুইন্টাল গুড় তৈরি হচ্ছে। তা-ও চাহিদামতো জোগান দেওয়া যাচ্ছে না।’’ পরামর্শদাতা দীপকবাবুর দাবি, ‘‘গুড়ের জন্য বিখ্যাত নদিয়া জেলা থেকেও অনেক বরাত আসছে।’’