বাঁকুড়ার মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের কর্মীরা টাকার আবদার করেছিলেন বলে অভিযোগ উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের কর্মীদের মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য ৫০ টাকা করে দিতে হবে। টাকা দেওয়া হলে তবেই জুটবে স্কুল ছাড়ার শংসাপত্র। অভিযোগ, বাঁকুড়ার মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণদের কাছে এমনই ‘আবদার’ করেছেন সেখানকার কর্মীরা। শনিবার কয়েক জন ছাত্রী এই ‘আবদারে’র কথা ফাঁস করে দিতেই গন্ডগোল শুরু হয়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলের কর্মীরা। স্কুল কর্তৃপক্ষেরও দাবি, কয়েক জন পড়ুয়া কর্মীদের স্বেচ্ছায় টাকা দিলেও জোর করে কারও কাছ থেকে তা নেওয়া হয়নি।
চলতি বছর বাঁকুড়ার এই হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২০৪ জন। বৃহস্পতিবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশের পর শুক্রবার থেকে স্কুলে মার্কশিট দেওয়ার কাজ শুরু হয়। মার্কশিটের সঙ্গেই উত্তীর্ণদের স্কুল ছাড়ার শংসাপত্র দেওয়ার নিয়ম। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ইন্টারনেট সমস্যায় শংসাপত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি। তা নিতে শনিবার স্কুলে যোগাযোগ করার কথা বলা হয়েছিল। অভিযোগ, শনিবার শংসাপত্র নিতে গেলে মিষ্টি খাওয়ার জন্য উত্তীর্ণদের মাথাপিছু ৫০ টাকা করে দিতে বলেন কর্মীরা। ওই টাকা না দিলে শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করেন তাঁরা। যদিও শংসাপত্র পেতে কর্মীদের টাকা দেওয়ার কোনও নির্দেশিকা জারি করেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে কয়েক জন ছাত্রছাত্রী টাকা দিলেও বেঁকে বসেন এক দল। শুরু হয় গন্ডগোল। খুশবু আগরওয়াল নামে এক ছাত্রীর কথায়, ‘‘(কর্মীরা) ওরা বলছে মিষ্টি খেতে টাকা নেওয়া হচ্ছে। না হলে উচ্চ মাধ্যমিকের পর স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট দেবে না। আমরা গত কাল (শুক্রবার) এর প্রতিবাদ করেছি। সে সময় শংসাপত্র দেয়নি। আজ (শনিবার) ডেকে বলছে, ভুল করেছি বলেও ৫০ টাকা নিয়েই শংসাপত্র দিল।’’
এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই টাকা নেওয়া তড়িঘড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধনচন্দ্র ঘোষের দাবি, “স্কুলের কয়েক জন অস্থায়ী কর্মী অত্যন্ত কম বেতনে কাজ করেন। তাঁরাই পড়ুয়াদের কাছে আবদার করেছিল। অনেকে স্বেচ্ছায় টাকা দিয়েছে। তবে জোর করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। পড়ুয়াদের একাংশ টাকা দিতে অস্বীকার করায় তা পুরোপুরি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলাম।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশ আমাকে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেছে।” দাবি-পাল্টা দাবির মাঝে বাঁকুড়ার জেলা স্কুল পরিদর্শক (সেকেন্ডারি) গৌতম মাল বলেন, “এ ভাবে কোনও পড়ুয়ার কাছ থেকে টাকা নেওয়া যায় না। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’’