ফাইল চিত্র
তৈরি হওয়ার দেড় বছর পরে, চালু হল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বৈদ্যুতিক চুল্লি।
বিষ্ণুপুর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শ্মশানকালী নতুন মহলে মঙ্গলবার বিকেলে বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করেন বিষ্ণুপুর পুরপ্রশাসক শ্যাম মুখোপাধ্যায়। বুধবার বিকেল থেকে চুল্লি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠেছে।
চুল্লি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভার। শ্যামবাবু বলেন, ‘‘আপাতত এক জন ইনচার্জ-সহ চার জন কর্মী নিযুক্ত করা হয়েছে। পরে আরও দু’জন নিয়োগ করা হবে।’’ তিনি জানান, প্রতিটি দাহের জন্য ২,০০০ টাকা নেওয়া হবে। তবে আবেদন করলে ‘সমব্যথী’ প্রকল্প থেকে ওই দাহের খরচ দেবে পুরসভা।
চুল্লি চালুর পরেও কয়েক দিন প্রশিক্ষণ দিতে উপস্থিত থাকছেন বাঁকুড়ার লখ্যাতড়া শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লির অপারেটর গণেশ দে। তিনি বলেন, “শুরুতে একটি দেহ দাহ করতে সময় লাগবে প্রায় এক ঘণ্টা। পরে সময় কমে আসবে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের গোড়ার দিকে, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে মহকুমা পূর্ত দফতর বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণের কাজ শুরু করে। ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি নির্মাণ শেষ করে চুল্লিটি পুরসভাকে হস্তান্তর করার জন্য পূর্ত দফতর মহকুমা প্রশাসনকে থেকে চিঠি দেয়। কিন্তু পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যার কথা জানিয়ে পুরসভা তখন চালু করতে রাজি হয়নি। পরবর্তী কালে সে সব তৈরি করা হয়। সম্প্রতি ওই চুল্লি চালুর জন্য বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসে। স্থানীয় শ্মশান কালী পরিচালনা কমিটির সম্পাদক প্রবীর কর বলেন, “বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হওয়ায় দেহ দাহ করা নিয়ে ভোগান্তি অনেক কমল।’’
বিষ্ণুপুর মহকুমা পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বাসব দত্ত জানান, দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণে খরচ পড়ছে এক কোটি ৮০ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। ৩,৮০০ বর্গ ফুটের জায়গায় চুল্লির বিস্তৃত ছাউনির নীচে শ্মশানযাত্রীদের বিশ্রামের ব্যবস্থা থাকছে। জল, আলো, বাগান ছাড়াও, রয়েছে ছাই ফেলার নির্দিষ্ট চাতাল।
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত বলেন, “বৈদ্যুতিক চুল্লি চালু হওয়ায় পরিবেশ দূষণ যেমন কমবে, তেমনই বর্ষাকালে দাহ করতে এসে খোলা আকাশের নীচে বিপদে পড়তে হবে না শ্মশানযাত্রীদের। শুধু বিষ্ণুপুর মহকুমাই নয়, যে কোনও এলাকার বাসিন্দা এই চুল্লি ব্যবহার করতে পারবেন।’’