নিজস্ব চিত্র
ঝাড়গ্রামের পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা বেলাপাহাড়ির পাশাপাশি বাঁকুড়ার কয়েকটি জায়গায় সিপিআই মাওবাদীদের নামে ডাকা বাংলা বন্ধের সামান্য প্রভাব দেখা গেল। জেলার তিন-চারটে ব্লকে ধরা পড়েছে দোকানপাট, বাজার বন্ধের ছবি। বন্ধ ছিল যানবাহন চলাচলও। তবে জেলার বাকি অংশে বন্ধের তেমন প্রভাব দেখা যায়নি।
রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা ব্লকে ফিরে এল ১১ বছর আগে মাওবাদীদের ডাকা বন্ধের স্মৃতি। সকাল থেকেই বন্ধ ছিল দোকান, বাজার। রাস্তায় নামেনি বাস, লরি এমনকি ছোট গাড়িও। সিমলাপাল ব্লকের কিছু অংশে বন্ধের ছবি দেখা গেলেও বেশ কয়েকটি জায়গায় দোকান-বাজার খুলেছিল। অন্য দিকে, বিনপুর, শিলদা, বেলপাহাড়ি, বাঁশপাহাড়ি, ঝাড়গ্রাম, দহিজুড়ি, জামবনি-সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্ধের ভাল সাড়া পড়েছে। এমনকি, জেলা সদর ঝাড়গ্রামের রাস্তাতেও শুক্রবার যানবাহনের সংখ্যা ছিল সাধারণ দিনের তুলনায় অনেক কম। বেশ কিছু দোকানপাটও খোলেনি। তবে সম্ভাব্য অশান্তি ঠেকাতে সকাল থেকেই ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় তৎপর রয়েছে পুলিশ। চলছে টহলদারি।
এক সময়ে অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করে জঙ্গলমহলে শক্তিবৃদ্ধি করেছিলেন মাওবাদীরা। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর অনুন্নয়নের ছবি কিছুটা বদলেছে। রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। জঙ্গলমহলের বহু মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন। চলছে সেচ প্রকল্পের কাজ। তা সত্ত্বেও মানুষের অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বলেই দাবি করছেন স্থানীয়রা। রানিবাঁধ ব্লকের নাচনা গ্রামের বাসিন্দা বিধান মণ্ডল বলেন, ‘‘বিনা পয়সার রেশন আর লক্ষ্মীর ভান্ডারের পাঁচশো টাকায় মানুষের পেট ভরে না। জঙ্গলমহলের প্রকৃত উন্নয়ন করতে হলে প্রতিটি মানুষের হাতে কাজ চাই। একশো দিনের কাজ হোক বা বিকল্প কর্মসংস্থান। কোনও ক্ষেত্রেই জঙ্গলমহলের মানুষকে কাজ দিতে পারেনি সরকার। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের মধ্যে।’’ স্থানীয় লক্ষ্মীরাম হেমব্রমও বলেন, ‘‘বছর আড়াই আগে শেষ বারের মতো একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পেয়েছিলাম। তার পর আর কাজ মেলেনি। রেশনে বিনা পয়সায় চাল পাচ্ছি ঠিকই, কিন্তু ভাতের সঙ্গে নুন ও আলুটাও তো প্রয়োজন। তা কেনার টাকা পাব কোথায়?’’