হুবহু: কুর্তির কাপড় দিয়েই তৈরি হয়েছে মাস্ক। বাঁকুড়া শহরের সুভাষরোেড একটি রেডিমেড পোশাকের দোকানে বৃহস্পতিবার বিকেলে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
রংমিলন্তি মাস্ক এ বছর পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার পুজোর বাজারের অনেকটাই দখল করে ফেলেছে। পুরুলিয়ার শপিং মলের মালিক বসন্ত খেড়িয়া ও বাঁকুড়া শহরের সুভাষ রোডের রেডিমেড পোশাকের ব্যবসায়ী অনুপম দত্ত জানাচ্ছেন, বিভিন্ন পোশাক নির্মাতা সংস্থা জামা, পাঞ্জাবি বা কুর্তির সঙ্গে দিচ্ছে একই কাপড়ের মাস্ক। কেউ কেউ আবার মাস্ক বানানোর জন্য পোশাকের সঙ্গে ছিট কাপড় দিয়ে দিচ্ছে। সে সবের চাহিদা রয়েছে ভালই। বাঁকুড়ার রেডিমেড পোশাক বিক্রেতা সুব্রত সেন জানান, অনেকে পোশাক পছন্দ হলেও মানানসই মাস্কের কথা চিন্তা করে কেনার সময়ে দোনামনা করছেন। ফলে, সমান গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন রঙের মাস্ক তৈরি রাখতে হচ্ছে।
পুরুলিয়া শহরের মুদিখানার মালিক ভোলানাথ সেন দোকানে নানা রকমের মাস্ক রাখছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা বলছে, শহরে ডাক্তার দেখাতে এসে প্রচুর মানুষ সস্তার মাস্ক কিনছেন। কাজ মিটলে আবার খালি মুখেই ফিরে যাচ্ছেন। এই সমস্ত নজির থেকে পুজোয় সংক্রমণ ছড়ানোর চিন্তা বাড়ছে। বৃহস্পতিবারই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে, পুজো কমিটিগুলিকে মাস্কের ব্যবস্থাও করে রাখতে হবে। তবে দুই জেলার নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানাচ্ছেন, পুজোয় তাঁরা মাস্ক পরেই বেরোবেন। আর সেই বুঝেই কেনাকাটা সেরে রাখছেন।
স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়া বড়জোড়ার অর্ণব মণ্ডল জানান, দূরত্ব বজায় রাখার জন্য এ বার পুজোয় গণপরিবহণ এড়িয়ে মোটরবাইক নিয়ে ঘোরার কথা ভেবেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কালো হেলমেট আর কালো চশমার সঙ্গে কালো মাস্ক পরব।’’ শাড়ির সঙ্গে মানানসই মাস্ক পরবেন বলে জানাচ্ছেন বিএড পড়ুয়া, বাঁকুড়া শহরের প্রীতি চন্দ। তিনি নিজেই ঘরে মাস্ক বানিয়ে নিচ্ছেন। প্রীতি বলেন, ‘‘স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে মাস্ক ব্যবহার করাটাই আসল কথা। ফেসবুকে এখন নানা রকমের চ্যালেঞ্জ চলছে। শাড়ির সঙ্গে মানানসই মাস্ক বাছা নিয়েও তেমন কিছু করা যায়। অনেকে অনুপ্রাণিত হতে পারেন।’’
পুরুলিয়া শহরের যুবক তন্ময় রজক একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘পুজোয় টি-শার্ট পরলে এন-৯৫ মাস্ক আর পাঞ্জাবি হলে রং মিলিয়ে কিছু পরব।’’ স্থানীয় দোকান থেকে দু’টি কাপড়ের মাস্ক কিনেছেন, জানান তন্ময়। রঘুনাথপুর কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শ্রেয়সী কর জানান, অন্য বছর পুজোর কেনাকাটা করতে বাইরে গেলেও এ বার বেরোচ্ছেনই না। তিনি বলেন, ‘‘পুজোয় যদি বেরোই, অবশ্যই মাস্ক পরব। বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সুরক্ষার প্রশ্নটাই সব থেকে বড় হবে।’’