জবলা গ্রামে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পাঠাল প্রশাসন। —নিজস্ব চিত্র
আন্ত্রিকে আক্রান্তদের মধ্যে এ বার মিলল কলেরার জীবাণু!
মে মাসের শেষ থেকে মানবাজারের জবলা গ্রামের সহিস পাড়ায় আন্ত্রিকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ ছাড়িয়েছে। এঁদের মধ্যে ৭ জনকে বুধবার পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মানবাজারের বিএমওএইচ কালীপদ সোরেন বলেন, ‘‘২৯ মে সহিস পাড়ায় গিয়ে দেখি বেশ কয়েক জন আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন। তখনই কয়েক জনের মল সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য বাকুঁড়া মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। সেই রিপোর্ট এসেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মলে কলেরার জীবাণু মিলেছে।’’
কোথা থেকে ওই রোগ ছড়াচ্ছে, তার খোঁজে স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় যান। তখনই নজরে আসে বিভিন্ন কাজে যাঁরা গ্রামের পুকুরের জল ব্যবহার করছেন, তাঁরাই এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, ‘‘ওই এলাকায় গিয়ে দেখি যে পুকুরের জল নির্বিচারে সকলে ব্যবহার করছেন তার জল তলানিতে ঠেকেছে। তাতেই চলছে স্নান, বাসন ধোয়ার কাজ।’’ বিএমওএইচ-এর কথায়, ‘‘ওই জল থেকেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত।’’
বুধবার মানবাজারের বিডিও সত্যজিত বিশ্বাস, বিএমওএইচ কালীপদ সোরেন এবং পুরুলিয়া থেকে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা এলাকায় যান। কালীপদবাবু জানান, এখনও পর্যন্ত কত জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তা ঠিক করে বলা যাচ্ছে না। কেননা, আক্রান্তদের অনেকেই সরাসরি পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এঁদের কেউ কেউ সুস্থ হয়ে ইতিমধ্যে বাড়িও ফিরেছেন। তবে বুধবার ৭ রোগীকে পুরুলিয়া পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার এলাকায় গিয়ে জনা পনেরো আক্রান্তের নাম মিলেছে। সকলকে পুকুরের জল ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। আক্রান্তদের ওষুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি জল ফুটিয়ে খাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। নিয়ম কঠোর ভাবে মানা হচ্ছে কিনা, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের অধিকারিকেরা। তবে কলেরা নিয়ে এখনই উদ্বেগের কিছু দেখছেন না পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত। তাঁর আশ্বাস, ‘‘এর চিকিৎসার জন্য অ্যন্টিবায়োটিক রয়েছে। এখনই চিন্তার কারণ নেই।’’