কোতুলপুরে। নিজস্ব চিত্র
চতুর্থীর সকাল। বাঁকুড়ার কোতুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের হলঘরে রং-তুলি-ক্যানভাস হাতে জড়ো হয়েছিল অর্ঘ্য রায়, স্নিগ্ধা পরামানিক, তিয়াশা খানেরা। তারা কেউ প্রাথমিক, কেউ বা মাধ্যমিকের পড়ুয়া। স্বাস্থ্য-বিধি মেনে তাঁরা আঁকল নানা ছবি। প্রদর্শনীর পাশাপাশি, ছবি বিক্রি করাও হল। যা টাকা মিলল, তা দিয়ে পোশাক কিনে তুলে দেওয়া হবে দুঃস্থ বাসিন্দাদের হাতে। আয়োজনে, কোতুলপুরের একটি আঁকার স্কুল। আজ, বুধবারও চলবে প্রদর্শনী।
পরিকল্পনাটা ওই আঁকার স্কুলের অধ্যক্ষ তরুণকুমার চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘করোনা-আবহে অনেকে কাজ হারিয়েছেন। অনেকের খাওয়া জুটছে না, উৎসবে নতুন পোশাক পাওয়া তো দূরঅস্ত। ছাত্রছাত্রীদের কাছে তাই কিছু করার প্রস্তাব রেখেছিলাম। সকলে মিলে ঠিক করে, ছবি আঁকবে। প্রদর্শনী হবে। ছবি বিক্রি করে তহবিল তৈরি হবে। প্রাক্তনীরাও এই কাজে শামিল হয়েছেন।’’ প্রদর্শনী ঘুরে দেখা গেল, খুদে পড়ুয়াদের আঁকা ছবিতেও সমাজ সচেতনতার বার্তা। জল অপচয় রোধ, ‘মাস্ক’ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা, পরিবেশ দূষণে সমাজের প্রভাব ফুটে উঠেছে ক্যানভাসে। প্রদর্শনী দেখতে এসে অনেকেই ছবি পছন্দ করলেন। বিক্রির উদ্দেশ্য জেনে, আগ্রহ ভরে কিনলেনও।
প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনীরাও হাজির টি-শার্টে করোনা-কালে সচেতনতার বার্তা নিয়ে। তাঁদের মধ্যে শৌভিক নন্দী, পায়েল চন্দ্রেরা বলেন, ‘‘স্যরের প্রস্তাব পেয়ে সময় নষ্ট করিনি। এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে থাকার সুযোগ হাতছাড়া করিনি। স্যরের কাছে শেখা আঁকাকে সম্বল করে রাঙিয়েছি গেঞ্জি, ক্যানভাস, ছাতা, জলের পাত্র। ১০০ জন বয়স্ক ও শিশুকে নতুন পোশাক কেনার তহবিল গড়ার লক্ষ্য নিয়েছি।’’কোতুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত মল্লিক উদ্যোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের আঁকা ছবি বিক্রি করে নতুন জামাকাপড় কিনছে অসহায় পড়শিদের জন্য। এ কাজের তুলনা হয় না।’’