মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
চোট পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে এখন বাড়িতেই বিশ্রামে আছেন তিনি। তার পরেও কি পঞ্চায়েতের ভোটপ্রচারে বীরভূমে তাঁর কর্মসূচি অপরিবর্তিত থাকবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে।
এমনিতে ভোটের আ গেই জেলার পাঁচ পঞ্চায়েত সমিতি শাসকদলের দখলে। অনেক গ্রাম পঞ্চায়েতও হাতে চলে এসেছে। তার পরেও যে বীরভূম শাসকদলের ‘বিশেষ নজরে’, তার প্রমাণ মিলছে তারকা প্রচারকের তালিকায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী নিজে যদি চোটের কারণে যদি না-ও আসতে পারেন, দলে তাঁর ‘আস্থাভাজন’ ফিরহাদ হাকিম বীরভূমে আসছেন বেশ কয়েক দিনের জন্য বলেই তৃণমূল সূত্রের খবর। ৩০ তারিখ থেকে রামপুরহাট মহকুমায় দিন চারেক থাকার কথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের।
দল সূত্রের খবর, ফিরহাদের সফরের লক্ষ্য সংখ্যালঘু ভোট। মহকুমার তিন-চারটি ব্লকে ঘুরে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করবেন পুরমন্ত্রী বলে তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে। যদিও রামপুরহাটের বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উনি বীরভূমের পর্যবেক্ষক। শুধু সংখ্যালঘু ভোট নয়, সামগ্রিক ভাবে ভোট প্রচারে বিভিন্ন এলাকায় যাবেন।’’
গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বহু আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হলেও জেলা পরিষদের সব আসনে লড়াই হচ্ছে। বাকি দুই স্তরেও অনেক আসনে বিরোধীরা লড়াইয়ে আছে। শাসকদলের মাথাব্যথা ‘গোঁজ’ প্রার্থীও। তার উপরে দুবরাজপুর বিধানসভা এলাকায় শাসকদলের পরিস্থিতি খুব ভাল নয়। জেলার একমাত্র এই বিধানসভা আসনেই গত ভোটে হারতে হয়েছে তৃণমূলকে। এই সব বিষয় মাথায় রেখে ৩০ তারিখ দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা খয়রাশোলে সভা করতে আসার কথা ছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু, তাঁর সূচি বাতিল করে অনুব্রতহীন জেলায় আসার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, মঙ্গলবার দুপুরে আবহাওয়া খারাপ থাকায় হেলিকপ্টার শিলিগুড়ির সেবক বিমানঘাঁটিতে জরুরিকালীন অবতরণ করার সময় পা এবং কোমরে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বীরভূম সফর ঘিরে সংশয় তৈরি হয়েছে তার পরেই।
তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও সূচি বাতিল ঘোষিত হয়নি ঠিকই। তবে সবুজ সঙ্কেতও নেই বুধবার বিকেল পর্যন্ত।’’ জেলা তৃণমূলের আর এক শীর্ষ নেতার মতে, চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে থাকতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই পরামর্শের উপরেই নির্ভর করেছে বীরভূম সফর। দল সূত্রে জানা যাচ্ছে, খয়রাশোলেই মনোজ তিওয়ারি ও শাশী পাঁজার কর্মসূচি রয়েছে ৩০ জুন এবং ২ জুলাই।
নেতা কর্মীদের সকলেই চাইছেন, সুস্থ হয়ে একটিবার জেলায় আসুন দিদি। বিশেষ করে দুবরাজপুর বিধানসভা এলাকায়। তৃণমূল সূত্রের খবর, তিনটি মাঠ দেখা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফরের জন্য। কিন্তু কাজ এগোয়নি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আসছেন না, এমন কোনও তথ্য সামনে আসেনি। তবে হাতে সময় কমে আসছে। বৃহস্পতিবার ইদ। দেখা যাক, কী হয়।’’