স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগ
West BEngal Lockdown

ফোন করলে পরামর্শ ডাক্তারদের

‘লকডাউন’-এর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল। বহু ডাক্তার এখনও নিয়মিত চেম্বারে আসছেন না।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২০ ০১:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

চেম্বারে গিয়ে ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না বলে অনেকেই আক্ষেপ করছেন। আবার করোনা পরিস্থিতিতে ছোট-খাটো শারীরিক সমস্যা হলে হাসপাতালে যেতেও অনেকে ভয় পাচ্ছেন। এই অবস্থায় সাধারণ রোগীদের সমস্যা মেটাতে এগিয়ে এল বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলা দফতর। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সহযোগিতায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে এক ঝাঁক ডাক্তার টেলিফোনে রোগীদের পরামর্শ দিতে এগিয়ে এসেছেন। ফোনে উপসর্গ শুনেই রোগীদের পরামর্শ দেবেন তাঁরা। শিশুরোগ থেকে স্ত্রীরোগ, মেডিসিন থেকে শল্য চিকিৎসার বিশেষজ্ঞেরা থাকছেন ফোনের ওপারে।

Advertisement

‘লকডাউন’-এর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল। বহু ডাক্তার এখনও নিয়মিত চেম্বারে আসছেন না। ফলে অনেক রোগী সমস্যায় পড়ছেন। সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বারে বসার জন্য লিখিত আবেদনও জমা পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলার কিছু ডাক্তার ফোনে পরামর্শ দেবেন শুনে স্বস্তি পেয়েছেন সাধারণ মানুষ।

বাঁকুড়ার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে ডাক্তার পাওয়া বা তাঁদের কাছে পৌঁছনো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছিল। তারপরেই আমরা আইএমএ-র সহযোগিতায় কিছু আগ্রহী ডাক্তারদের নিয়ে ফোনে মানুষকে পরিষেবা দেওয়া যায় কি না, ভাবনা-চিন্তা শুরু করি।’’

Advertisement

আইএমএ-র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অশোককুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছ থেকে প্রস্তাবটি শুনে খুশি হয়েছিলাম। কয়েকজন ডাক্তারকে এ নিয়ে বলতেই স্বেচ্ছায় তাঁরা এগিয়ে এসেছেন।” তিনি জানান, ফেসবুকে ‘আইএমএ বাঁকুড়া ব্রাঞ্চ’ দিয়ে খোঁজ করলেই ডাক্তারদের নাম, ফোন ও যোগাযোগ করার সময়ের তালিকা পাওয়া যাবে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, তাঁর অফিসে ‘কোভিড ১৯’-এর কন্ট্রোল রুমের নম্বরেও ফোন করে ডাক্তারদের খোঁজ মিলবে (০৩২৪২-২৫৩৮৪৭ ও ৭৬০৫০৬১৪৯৬)।

এই কর্মকাণ্ডে শামিল হয়েছেন বাঁকুড়ার প্রবীণ শল্য চিকিৎসক বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ফোনে ইতিমধ্যেই অনেকে যোগাযোগ করছেন। সাধারণ সমস্যার ক্ষেত্রে ফোনে উপসর্গ শুনেই ওষুধ বলছি। তবে জটিল কিছু হলে রোগীকে না দেখে ওষুধ বলা যাচ্ছে না।” বাঁকুড়ার প্রবীণ বাসিন্দা অমরনাথ পাল বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’’

কেবল অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পরিষেবাতেই থমকে নেই বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এই উদ্যোগ। ফোনে ফোনে মিলছে অসুখের আয়ুর্বেদিক দাওয়াই ও মানসিক কাউন্সেলিং- এর পরিষেবাও। যাঁরা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় অভ্যস্ত, তাঁরা ফোনে স্বাস্থ্য দফতরের আয়ুষ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সেখানেও একই ভাবে সাহায্য মিলবে। এ ছাড়া লকডাউন-এ বাড়িতে বসে থেকে অনেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এই সকল মানুষের জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে ফোনে অবসাদ মেটানোর টোটকাও জানাচ্ছেন এক কাউন্সিলর। এক্ষেত্রে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করতে হবে।

শ্যামলবাবু বলেন, “অ্যালোপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা এবং মানসিক কাউন্সেলিং সবই ফোনে নিখরচায় দেওয়া হচ্ছে। কেবল নির্দিষ্ট সময়ে ফোন করতে হবে।” তিনি জানান, আগামী ২১ মে পর্যন্ত এই পরিষেবাগুলি চালু রাখার ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement