পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে প্রতীকী মেডিক্যাল বিলে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র
‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’ তুলে দিয়ে ‘জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন’ গঠনের বিল নিয়ে আপত্তি তুলেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। ওই বিলের প্রতিবাদে বুধবার গোটা দেশে ‘জরুরি নয়’ এমন সব চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধের ডাক দিয়েছিল চিকিৎসকদের ওই সংগঠন। তার জেরে এ দিন বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার হাসপাতালগুলিতে বহির্বিভাগে গিয়ে ডাক্তার দেখাতে পারবেন কি না তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল।
তবে কোথাও কোথাও চিকিৎসকেরা পোশাকে কালো ব্যাজ পরে প্রতিবাদ দেখালেও কাজ বন্ধ করেননি। দিনের শেষে তাই স্বস্তি পেলেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।
এক মাস আগে চিকিৎসক নিগ্রহের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামার জেরে হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তির স্মৃতি এখনও টাটকা। তাই এ দিন রোগী দেখা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল কোনও কোনও মহলে। তবে, কালো ব্যাজ পরে এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যালের চিকিৎসকেরা কাজে যোগ দেন।
এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগে রোজকার মতোই ভিড় দেখা গিয়েছে। অন্তর্বিভাগও স্বাভাবিক ছিল। শালতোড়া থেকে বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন অজিত মোহন্ত। তিনি বলেন, “কিছু দিন ধরেই হাঁটুর ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে বাবা। তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। বাসে আসতে আসতে শুনছিলাম চিকিৎসকেরা কাজে যোগ দেবেন না। খুবই চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। তবে এখানে এসে দেখলাম সব স্বাভাবিক।’’ যদিও রোগীদের একাংশের অভিযোগ, অন্যদিনের থেকে চিকিৎসকের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল এ দিন।
যদিও বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, “চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ পরে কেন্দ্রের ওই বিলের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। দিনভর হাসপাতালের সব বিভাগের পরিষেবাই ছিল সচল।”
খাতড়া ও বিষ্ণুপুর হাসপাতালেও পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কালো ব্যাজ পরে রোগী দেখেন। আইএমএ-র উদ্যোগে এ দিন হাসপাতালে সুপারের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের চিকিৎসকদের পাশাপাশি শহরের অন্য চিকিৎসেরাও যোগ দেন। জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বাতিলের দাবিতে স্লোগান দেওয়া-সহ এই বিলের প্রতীকী কপিও পোড়ানো হয়।
আইএমএ-র পুরুলিয়া জেলা সভাপতি মনোজিৎ মণ্ডল ও জেলা সম্পাদক অজিতপ্রসাদ মুর্মু বলেন, ‘‘ওই বিলের প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা। তবে এই হাসপাতালের উপরে জেলার চিকিৎসা পরিষেবা অনেকখানি নির্ভর করে বলে পরিষেবা সচল রাখা হয়েছে।’’ রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পরিষেবাও ছিল স্বাভাবিক।