শান্তিনিকেতন পূর্বপল্লির মাঠে ‘বিকল্প’ পৌষমেলায় চলছে জোরকদমে প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।
তিন বছর পরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লি মাঠে ফিরেছে ‘বিকল্প’ পৌষমেলা। বিগত দিনে বিশ্বভারতী যে-ভাবে মেলা উদ্বোধন হয়েছে, এ বারও সে-ভাবেই উদ্বোধন করা হবে। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনের এই মেলার আয়োজন করায় ভার্চুয়ালি তা উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনের দিন মেলামাঠে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও শাসকদলের নেতার।
গত শনিবার থেকে মেলার স্টল বণ্টনের কাজ শুরু হয়েছে। তবে, স্টল বণ্টন নিয়ে শুরু থেকেই অনিয়ম ও অব্যবস্থার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। একই স্টল ২-৩ জন ব্যবসায়ীকে দিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। যা নিয়ে শুক্রবারও ক্ষোভ দেখিয়েছেন বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ী। এই অবস্থায় স্টল বিলি নিয়ে উদ্যোক্তাদের কড়া বার্তা দিয়েছেন জেলাশাসক বিধান রায়। এর পরেই ওই সমস্ত স্টল নিয়ম মেনে ব্যবসায়ীদেরকে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, অধিকাংশ স্টল বুক হয়ে গিয়েছে। এখনও বহু আবেদনপত্র বিবেচনাধীন। জেলাশাসক বলেন, ‘‘স্টল বণ্টন নিয়ে কোনও রকম দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।’’
এ দিন পূর্বপল্লির মাঠে গিয়ে দেখা গেল, স্টল বাঁধার কাজ চলছে। স্টল নিতে ভিড় করেছেন ব্যবসায়ীরা। মাঠ পরিদর্শন করেন পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। ‘বিকল্প’ পৌষমেলার নিরাপত্তায় শুক্রবার থেকেই মাঠে বসানো হয়েছে নজর ক্যামেরা। দুশোর বেশি ক্যামেরা থাকছে মাঠ ও মাঠ সংলগ্ন এলাকায়। মেলা প্রাঙ্গণে থাকছে ৯টি ওয়াচ টাওয়ার। একাধিক ড্রোন ক্যামেরার মধ্যে দিয়েও চলবে নজরদারি।
মেলার নিরাপত্তায় সিভিক ভলেন্টিয়ার, পুরুষ ও মহিলা পুলিশকর্মী এবং অফিসার মিলিয়ে প্রায় ১৭০০- ১৮০০ জন থাকবেন। পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি, এসডিপিও পদমর্যাদার ১৭ জন অফিসার নজরদারি চালাবেন। কেপমারি, ইভটিজিং ও যে কোনও ধরনের অপরাধ রুখতে পুলিশের একাধিক দল রাখা হচ্ছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মেলা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে।’’
এ ছাড়াও যান নিয়ন্ত্রণের জন্য মেলামাঠে ঢোকার রাস্তায় একাধিক ড্রপ গেট রাখা হচ্ছে। মেলায় ঢোকার সব রাস্তাতেই পার্কিং জ়োন করা হয়েছে। মেলা চত্বরে থাকবে পুলিশের একাধিক কন্ট্রোলরুম। সেখান থেকেই সমস্ত কিছু নজরে রাখা হবে। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি বিশ্বভারতীর বেশ কয়েক জন পড়ুয়া মেলায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন বলে জানা গিয়েছে। পরিবেশ দূষণের কথা মাথায় রেখে বিশ্বভারতীর শৌচাগার-সহ বেশ কিছু বায়ো টয়লেট বসানো চলছে। এ ছাড়াও মেলায় জল, বিদ্যুৎ ও জরুরি পরিষেবা পরিষেবা থাকছে।