মিড-ডে মিলে আম-কাঁঠাল। নিজস্ব চিত্র
লোকসংস্কৃতির গবেষণা কেন্দ্র ‘মানভূম লোকসংস্কৃতি কেন্দ্র’-এর আম-কাঁঠালের বাগানে ফলছে দেদার আম কাঁঠাল। সেই থেকেই মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে মরসুমি ফল দেওয়ার ভাবনা লোক গবেষক তথা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সুভাষ রায়ের মাথায় এসেছিল। পরে ভেবেছিলেন, আম-কাঁঠাল খেয়ে বীজ ফেলে দিচ্ছে পড়ুয়ারা। সেই বীজ যদি তারা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রোপণ করে, তাহলে ভাল হয়।
সেই থেকে শুরু। গত দু’-তিন বছর ধরে বাড়ি ও আশপাশের ফাঁকা জমিতে আম-কাঁঠালের বীজ লাগাচ্ছে মালাধর প্রাথমিক স্কুল ও লোকসংস্কৃতি কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীরা। সুভাষের দাবি, ৫০টির বেশি আম-কাঁঠালের চারা মাথা তুলেছে এর মধ্যে। রঘুনাথপুর ২ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিশ্বজিৎ হেমব্রম বলেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। মিড-ডে মিলে মরসুমি ফল দেওয়ায় পড়ুয়াদের খাবারে যেমন বৈচিত্র্য আসছে, তেমনই ওই ফলের বীজ পড়ুয়াদের দিয়ে রোপণ করিয়ে তাদের মধ্যে প্রকৃতিগত সচেতনতা তৈরি করা যাচ্ছে। নতুন কিছু সৃষ্টি করছে পড়ুয়ারা।”
রঘুনাথপুর ২ ব্লকের সগড়কায় রয়েছে ‘মানভূম লোকসংস্কৃতি কেন্দ্র’। সেখানে প্রায় চল্লিশ জন পড়ুয়াকে সকালে নিখরচায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাদের জলখাবারে আম, কাঁঠাল দেওয়া হত। সুভাষ রায়ের কথায়, ‘‘বাগানে দেদার আম-কাঁঠাল হয়। আগে তা শুধু প্রশিক্ষার্থীদের দেওয়া হত। পরে সেই ফল মালাধার প্রাথমিক স্কুলের ত্রিশ জন পড়ুয়াকেও মিড-ডে মিলে দিতে শুরু করি।’’ সুভাষ জানান, পড়ুয়াদের ফেলে দেওয়া আম, কাঁঠালের বীজ থেকে কিছু চারা তৈরি হয়। তখনই তিনি ভাবেন, পড়ুয়াদের দিয়েই সেই বীজ রোপণ করাবেন।
মালাধার গ্রামেরই বাসিন্দা তথা অভিভাবক যদু মল্লিক, রামু মাহাতো বলেন, ‘‘স্কুলে দুপুরের খাবারে আম-কাঁঠাল দেওয়ার বিষয়টি ভাল লেগেছিল। এলাকায় সবুজ বাড়ানোর জন্য শিক্ষকেরা পরে বীজ থেকে চারা তৈরি করে রোপণের প্রস্তাব দেন। আমরাও রাজি হই।’’
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক জানান, আগামী দিনে ওই চক্রের সমস্ত স্কুলেই এই উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। বিষয়টিকে প্রচারে আনতে মালধার স্কুলে গিয়ে পুরো উদ্যোগের ছবি তুলে
শিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন তাঁরা।