আনন্দে: দীপ্তেশ পাল। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়ার কোনও বিকল্প নেই, সেটা আবারও প্রমাণ করে দিল রামপুরহাটের দীপ্তেশ পাল। মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় তার সম্ভাব্য স্থান তৃতীয়। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। বিষয়ভিত্তিক নম্বর— বাংলা ৯৭, ইংরেজি ৯৮, অঙ্ক ১০০, ভৌতবিজ্ঞান ১০০, জীবনবিজ্ঞান ৯৮, ইতিহাস ৯৮, ভূগোল ৯৭।
দীপ্তেশের কথায়, ‘‘প্রতিটি বিষয়েরই গৃহশিক্ষক ছিল। কিন্তু, প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়েছিলাম। ভাল ফলের আশা ছিল। তাই বলে তৃতীয় হব ভাবিনি।’’ ছোটবেলা থেকেই অঙ্কের প্রতি ভাললাগা রয়েছে তার। আপাতত বিজ্ঞান বিভাগ, পরে অঙ্ক নিয়েই উচ্চশিক্ষার ইচ্ছে রয়েছে তার। স্বপ্ন দেখে ‘ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট’-এ (আইএসআই) পরিসংখ্যানবিদ হওয়ার।
রামপুরহাটের একটি প্যাথলজি সেন্টারের অংশীদার দেবগোপাল পাল একমাত্র ছেলেকে মানুষ করার জন্য অনেক দিন হল রামপুরহাট শহরের ভাড়াবাড়িতে উঠে এসেছেন। ছেলের পড়ার জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন তিনি। রামপুরহাট প্রণব শিক্ষা নিকেতন থেকে প্রাথমিক স্তর উত্তীর্ণ হওয়ার পর রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনে ভর্তি হয় দীপ্তেশ। সেখানে সপ্তম শ্রেণি থেকেই স্কুলে প্রথম হয়ে এসেছে সে।
ফেলুদার ভক্ত দীপ্তেশ সঙ্গীতের চর্চাও করে। পছন্দের তালিকায় একেবারে প্রথমে রবীন্দ্রনাথের প্রকৃতি পর্যায়ের গান। দশম শ্রেণিতে ওঠার পর অবশ্য সেই চর্চায় কিছুটা হলেও ছেদ পড়ে। এই সময় থেকেই প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা গৃহশিক্ষক ছিল দীপ্তেশের। সেই শিক্ষকদের আন্তরিক চেষ্টা, আর পরিশ্রম— এই দু’য়েই মেধা তালিকায় একেবারে প্রথম দিকে ঠাঁই পেয়েছে জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের এই ছাত্র। দীপ্তেশের কথায়, ‘‘তবে সাত-আট ঘণ্টার বেশি কখনই পড়িনি।’’
বিরাট কোহলির অনুরাগী দীপ্তেশ টেস্টে পেয়েছিল ৬৬৫। ফাইনালে বেড়েছে ২৩ নম্বর। ছেলেকে জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনেই পড়াতে চান মা লতিকা পাল। একই ইচ্ছে বাবা দেবগোপালবাবুরও। স্কুলের সুনাম বজায় রেখে ছাত্র রাজ্যে তৃতীয় হওয়ায় খুশি জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষক, সহ শিক্ষকেরা। সাফল্যের খবর শুনে দীপ্তেশের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রামপুরহাটের আইসি স্বপন ভৌমিক।