BJP

WB Municipal Election 2022: ‘স্বপ্নের পুরুলিয়া’ গড়ার দাবি দিলীপের

রঘুনাথপুরে প্রচার-পর্ব সেরে, এ দিন দুপুরে পুরুলিয়ায় দলীয় পুরপ্রার্থীদের সমর্থনে একটি পদযাত্রায় যোগ দেন দিলীপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও ঝালদা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:১৪
Share:

পুরুলিয়ায় ভোট প্রচারে দিলীপ ঘোষ। নীচে রঘুনাথপুরে। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূলের লোকেরা রেশনের টাকা ‘লুট’ করছে বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সোমবার পুরুলিয়ায় পুরভোটের প্রচারসভা থেকে এমন অভিযোগ তোলেন তিনি। পাশাপাশি, ‘স্বপ্নের পুরুলিয়া’ গড়তে বিজেপিকে সমর্থনের আবেদন জানান দিলীপ। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।

Advertisement

রঘুনাথপুরে প্রচার-পর্ব সেরে, এ দিন দুপুরে পুরুলিয়ায় দলীয় পুরপ্রার্থীদের সমর্থনে একটি পদযাত্রায় যোগ দেন দিলীপ। ভোটে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ও লড়ছেন। তাঁর ওয়ার্ড থেকেই পদযাত্রা শুরু হয়। দিলীপের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, প্রার্থী সুদীপ মুখোপাধ্যায়, শহরের নেতা ও প্রার্থী গৌতম রায়, জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা, বিধায়ক নরহরি মাহাতো, বাণেশ্বর মাহাতো প্রমুখ।

পরে, সভা থেকে দিলীপের অভিযোগ, “দু’কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড বেরিয়েছে। এই কার্ড নিয়ে দু’বছর, তিন বছর, দশ বছর ধরে এঁরা লুট করেছেন।” গ্রাহকদের জন্য মাসে বরাদ্দ চাল, ডাল ও আটার পরিমাণ উল্লেখ করে তাঁর দাবি, “একটা রেশন কার্ডে মাসে ছ’শো টাকা লাভ। কে খাচ্ছিল এত দিন? দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা এই দশ বছরে ‘দিদির ভাইয়েরা’ লুট করেছে ডিলারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে। এ বারে বলছে, ‘তোমাদের এত দিন খেতে দিয়েছি। এ বারে বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছব’।” তাঁর আরও অভিযোগ, “বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা, অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে রেশন কার্ড বানিয়ে আমাদের রেশন খেয়ে নিচ্ছে। তাই সেটা আমরা বন্ধ করেছি।”

Advertisement

এর পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প, ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি দিলীপ। বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার, লক্ষ্মীর ভান্ডার বলে লক্ষ্মীদের রাস্তায় দাঁড় করাচ্ছেন সারা দিন। কিন্তু কেউ ভাতা পাচ্ছেন না। কেন এই চালাকি?” তাঁর আরও অভিযোগ, “যেখানে রাজ্যের ৭২ লক্ষ গরিব কৃষকের টাকা পাওয়ার কথা, সেখানে মাত্র ২৭ লক্ষ কৃষক টাকা পাচ্ছেন। বাকি কৃষকেরা কী দোষ করল, তার উত্তর দিতে হবে।”

এর পাশাপাশি, একাধিক স্থানীয় বিষয় নিয়েও সরব ছিলেন দিলীপ। বলেন, “বিজেপির প্রতি পুরুলিয়ার মানুষের টান আছে। আপনারা পঞ্চায়েত ভোটে আমাদের সমর্থন করেছেন। লোকসভা ভোটে জিতিয়েছেন। বিধানসভায় বিধায়কদের জিতিয়েছেন। এ বারে পুর-বোর্ড তৈরি করে দিন। স্বপ্নের পুরুলিয়া তৈরির জন্য বিজেপিকে সমর্থন করার আবেদন নিয়েই রাস্তায় নেমেছি। উন্নয়ন নিচু স্তর থেকে হয়, তাই পুরবোর্ডে আমাদের আসা দরকার।” প্রাচীন শহর পুরুলিয়ায় রাস্তাঘাট ঠিকমতো সারাই না হওয়া, পানীয় জলের সমস্যার সমাধান না নিয়েও শাসকদলের দিকে তোপ দাগেন তিনি।

পরে, ঝালদায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে স্থানীয় গান্ধীনচক থেকে মেরি আপকার গ্রাউন্ড পর্যন্ত পদযাত্রা করেন দিলীপ। ঝালদা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় এক পথসভা থেকে তিনি বলেন, “ঝালদা শতবর্ষ প্রাচীন পুরসভা। দীর্ঘদিন এখানে বামফ্রন্ট ও পরে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও কোনও উন্নয়ন হয়নি। শুধু কাটমানি খেয়ে গিয়েছে। চারদিকে শুধু জঞ্জাল আর জঞ্জাল। গোটা শহরটাই একটা ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে।” কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিলেও তা মানুষের উন্নয়নে কাজে লাগানো হচ্ছে না অভিযোগ তুলে তাঁর সংযোজন, “মিছিল করার সময়ে দেখছিলাম, এখনও অনেক কাঁচা বাড়ি রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তো টাকা দিচ্ছে। সে টাকা যাচ্ছে কোথায়?”

জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “বিজেপি যদি এতই সাধারণের কথা ভাবে, তা হলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমছে না কেন। কেন সাধারণের যাতায়াতের অন্যতম যাতায়াতের মাধ্যম, অনেক লোকাল ট্রেন এখনও বন্ধ রয়েছে। তার পরে, একের পর এক রাষ্ট্রের সম্পত্তি বেচে দিতে উদ্যোগী হয়েছে বিজেপি সরকার। ওদের মুখে এ সব কথা মানায় না।” তাঁর সংযোজন, “দেশের সম্পত্তিই যাঁরা বেচে দিচ্ছেন, কী করে তাঁরা স্বপ্নের পুরুলিয়া গড়ার কথা বলেন!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement