—ফাইল চিত্র
পথে নেমে মিছিল, দোকান বন্ধের অনুরোধ থেকে পুলিশের লাঠি চালানোর অভিযোগ— কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা দেশ জোড়া ধর্মঘটে দিনভর চলল নানা কিছু। যে ধর্মঘট সফল করার ডাক দিয়ে টানা প্রচার কর্মসূচি চলেছিল, তা কতটা সফল হল সেই নিয়েও চলল চর্চা। কংগ্রেস, বাম নেতৃত্বের দাবি, ধর্মঘট স্বতস্ফূর্ত হয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে তা কর্মীদের মনোবল বাড়াবে। সেই দাবি নস্যাৎ করেছে জেলা তৃণমূল, বিজেপি নেতৃত্ব।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি ও শ্রম আইনের প্রতিবাদ সহ সাত দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে বাম, কংগ্রেস কর্মীরা পথে নেমে মিছিল করেন। ধর্মঘটের সমর্থনে এ দিন ইলামবাজার বাসস্ট্যান্ডে জাতীয় সড়কের উপরে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা। সেই সময় পুলিশ লাঠি চালিয়েছে বলে আন্দোলনকারীদের দাবি। তাতে দু’জন জখম হন। দুবরাজপুর বাজারে দোকান খোলা নিয়ে বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে এক ব্যবসায়ীর বাদানুবাদ হয়।
জেলার বোলপুর সহ রামপুরহাট, সিউড়ি, দুবরাজপুর, নলহাটি, সাঁইথিয়া, মহম্মদবাজার, নানুর, লাভপুর সর্বত্রই বাজার-হাট আংশিক খোলা ছিল। রাজগ্রাম থেকে রাজনগর জেলার কোথাও বেসরকারি বাস চলতে দেখা যায়নি। প্রয়োজনে যাঁরা বেরিয়েছিলেন, তাঁদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। বোলপুর বাজারে শ্রীনিকেতন রোড থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। বোলপুর সুপার মার্কেটের দোকান খোলা ছিল। সিউড়িতে বাসস্ট্যান্ড সহ টিনবাজার এলাকায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল।
রামপুরহাট শহরে ছোট দোকানগুলি খোলা থাকলেও বড় দোকান বন্ধ ছিল। রামপুরহাট শহরে পোস্ট অফিস, জীবনবিমা নিগম অফিস বন্ধ ছিল। রামপুরহাট গাঁধী স্টেডিয়াম সংলগ্ন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক পুলিশ গিয়ে খুলে দিলেও কর্মীদের হাজিরা কম ছিল।
জেলার পাথর শিল্পাঞ্চলেও শ্রমিকদের হাজিরা কম ছিল। রামপুরহাট থানার শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘটের সমর্থনে এক ঘণ্টা অবরোধ করেন সিপিএম কর্মীরা। ধর্মঘটের সমর্থনে এসইউসি কর্মীরা রামপুরহাট জাতীয় সড়কের উপরে মাড়গ্রাম মোড়ে অবরোধ করেন। এআইটিইউসি-র সম্পাদিকা আয়েশা খাতুনের দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষ ধর্মঘটকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন করেছেন।’’
ধর্মঘট কতটা সফল হল সেই নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মিল্টন রশিদের দাবি, ‘‘প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে ধর্মঘটকে সমর্থন করে সাধারণ মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছেন বাম ও কংগ্রেস জোটই পারে সমাজকে ধর্মীয় মেরুকরণ থেকে বাঁচাতে। এটা বিধানসভা নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেস জোটের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিল।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণের মতে, ‘‘এক মাস ব্যাপী যেভাবে প্রচার চালানো হয়েছে তাতে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল মনে করেন, ‘‘জেলাতে ধর্মঘটের প্রভাব পড়েনি। সাধারণ মানুষ বাম ও কংগ্রেসকে অনেক আগেই দূরে সরিয়ে দিয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহের কথায়, ‘‘সাধারণ মানুষ পথে বেরিয়েছেন। অফিসে ৯৯ শতাংশ কর্মী হাজিরা ছিল। দোকানপাট, বাজার-হাট সব জায়গাতেই খোলা ছিল।’’