বালির গাড়িতে মৃত্যু, বিক্ষোভ

কখনও গ্রামীণ রাস্তায়, কখনও রাজ্য সড়কে। বালি বোঝাই গাড়িতে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। বুধবার সকালে বিষ্ণুপুর আরামবাগ রাজ্য সড়কে বাঁকুড়ার জয়পুর থানার চাতরা মোড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে এক পথচারীর মৃত্যু হল বালি বোঝাই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ০১:১৯
Share:

কখনও গ্রামীণ রাস্তায়, কখনও রাজ্য সড়কে। বালি বোঝাই গাড়িতে দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। বুধবার সকালে বিষ্ণুপুর আরামবাগ রাজ্য সড়কে বাঁকুড়ার জয়পুর থানার চাতরা মোড়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে এক পথচারীর মৃত্যু হল বালি বোঝাই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ভাগ্য দীগর (৫১) জয়পুরের চণ্ডীপুর এলাকার বাসিন্দা। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাকটি আরামবাগের দিকে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনার পরেই গাড়ি ফেলে চম্পট দেয় চালক। স্থানীয় মানুষজন বালির গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ঘটনার পরে প্রায় ঘণ্টা খানেক ওই রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠলেও ক্ষোভ কমেনি।

ঘটনা হল, মাস খানেক আগেই জয়পুরের পানখাওলি গ্রামের রাস্তায় বালির গাড়িতে চাপা পড়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল এলাকায়। গ্রামের রাস্তার পাশে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকটি বালি বোঝাই গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় গ্রামবাসী। ক্ষোভ সামাল দিতে জেলা প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল সে বার।

Advertisement

ওই ঘটনার কয়েক মাস আগেও বিষ্ণুপুর বাইপাস এলাকায় এক স্কুল শিক্ষকেরও মৃত্যু হয়েছিল একই ভাবে। সব ক্ষেত্রেই বেপরোয়া ভাবে বালি বোঝাই গাড়ি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

কেন বারবার এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে?

স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেআইনি অতিরিক্ত বালি বোঝাই করা হয় ট্রাকগুলিতে। তাই পুলিশ ও প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যত দ্রুত সম্ভব চালকেরা গন্তব্যে পৌঁছতে চান। সেই তাড়াহুড়োয় অনেক সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে।

আবার দিনের বেলায় বালি বোঝাই অনেক ট্রাক রাস্তার পাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এই অবস্থায় অনেক সময় পিছন থেকে কোনও গাড়ি আসছে কি না, পথচারীরা তা বুঝতে পারেন না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।

এ দিনের দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘটনার সময়ে একাধিক বালি বোঝাই ট্রাক রাজ্য সড়কের এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। পিছন থেকে কখন ওই গাড়িটি আসছিল তা বুঝতে পারেননি ওই প্রৌঢ়।

চাতরা মোড় সংলগ্ন জয়পুরের ছাতিনা গ্রামের বাসিন্দা নব চক্রবর্তী, প্রদীপ চক্রবর্তীরা বলেন, “বালি বোঝাই ট্রাকগুলি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে না থাকলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। প্রশাসন যদি বালি গাড়ির গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্যোগী না হয় তাহলে আরও বহু মানুষের প্রাণ যাবে এই ভাবে।”

পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাকটিকে আটক করে চালকের খোঁজ শুরু হয়েছে। মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

বাঁকুড়া জেলার বালিঘাট লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা পুলিশ ও প্রশাসন বালির ট্রাক চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করতে না এগিয়ে এলে সমস্যা কমবে না। ফলে মৃত্যু-মিছিল চলতেই থাকবে। এ বার এর ছেদ চাইছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement