—নিজস্ব চিত্র।
মাত্র তিন দিন আগে তৈরি হয়েছিল কংক্রিটের পাকা রাস্তা। সেই রাস্তার দু’দিকেই অসংখ্য ফাটল! হাত দিয়ে সামান্য চাপেই উঠে আসছে কংক্রিটের চাঙড়। আর একটু চাপ দিলেই আবার সেই চাঙড় গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে। বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের শিউলিপাহাড়ি গ্রামের রাস্তার এমন হাল দেখে প্রতিবাদে নেমেছেন গ্রামবাসীরা। রাস্তায় গাছের ডাল ফেলে পথ অবরোধে শামিল হয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি পথশ্রী প্রকল্পে বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের ঘোষেরগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়বোনা বাজার থেকে শিউলিপাহাড়ি গ্রাম হয়ে চাকতাতল পর্যন্ত ২.১৭ কিলোমিটার রাস্তা কংক্রিটের করার উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। কংক্রিটের ওই রাস্তার জন্য ৮৬ লক্ষ ৫ হাজার ২৩৪ টাকা অর্থবরাদ্দ হয়। কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। দিন তিনেক আগে ওই রাস্তার শিউলিপাহাড়ি গ্রামের পার্শ্ববর্তী প্রায় ৪০০ মিটার রাস্তা ঢালাই করে বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা। ঢালাই হওয়ার তিন দিন যেতে না যেতেই রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত সামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভে শামিল হলেন স্থানীয়েরা। স্থানীয় শিউলিপাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণের পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। ৭২ ঘণ্টা যেতে না যেতেই হাতের চাপে ভেঙে যেতে থাকে কংক্রিটের রাস্তার বিভিন্ন অংশ। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে তৈরি করা রাস্তা ভেঙে দিয়ে ফের নতুন করে রাস্তা নির্মাণের দাবিতে রবিবার সকাল থেকে আন্দোলনে নামেন স্থানীয়েরা। গ্রামে প্রবেশের মুখে রাস্তায় গাছের ডাল ফেলে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
শিউলিপাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মান অত্যন্ত খারাপ। নামমাত্র বালি ও পাথর ব্যবহার করে বেশির ভাগ জায়গায় সিমেন্টের সঙ্গে মোরাম মিশিয়ে ঢালাই করে দিয়েছে ঠিকা সংস্থা। অবিলম্বে এই রাস্তা ভেঙে ফেলে নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করা না হলে আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।’’ একই দাবি শিউলিপাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কৌশিক মণ্ডল ও সিদ্ধেশ্বর মণ্ডলেরও। পথ অবরোধের খবর পেয়ে শিউলিপাহাড়ি গ্রামে যান ঘোষেরগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তনু কুন্ডু। শান্তনু কুন্ডু বলেন, ‘‘আমি সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখেছি নবনির্মিত রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় ফাটল হয়েছে। কেন এমনটা হল জানি না। সোমবার ইঞ্জিনিয়ারকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছি। ইঞ্জিনিয়ারের কাছ থেকে রিপোর্ট পেলে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’