গোবাগ মোড়ে। নিজস্ব চিত্র।
বন দফতরের বিরুদ্ধে শালপাতা তুলতে আসা আদিবাসী মহিলাদের আটকে রেখে হেনস্থার অভিযোগে বিক্ষোভ-সভা করল ভারত জাকাত মাঝি পারগানা জুয়ান মহল। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার ব্লক সদর, গোবাগের মোড়ে ওই সভায় হাজারের বেশি লোকের জমায়েত হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বন দফতরের রঘুনাথপুর রেঞ্জ।
ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গড়পঞ্চকোট পাহাড়ের একাংশে শালপাতা তুলতে গিয়েছিলেন কিছু আদিবাসী মহিলা। দাবি, তাঁরা সকলেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যেরা তাঁদের শালপাতা তুলতে নিষেধ করেন। বিষয়টি বন দফতরকেও জানানো হয়। খবর পেয়ে যান ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের পুরুলিয়ার সভাপতি, নিতুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা রাজেন টুডুও।
বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যদের অভিযোগ, রাজেনবাবু দফতরের কর্মীদের ঘটনাস্থলে আসার আগেই এক প্রকার জোর খাটিয়ে ওই মহিলাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে বন দফতরের কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদও হয় রাজেনবাবুর।
এ দিন বিক্ষোভসভা থেকে রাজেনবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘কোথা থেকে কারা এসে শালপাতা তুলছে, সেটা মূল বিষয় নয়। আসল কথা হল, আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনদের অন্যায় ভাবে জঙ্গল থেকে শালপাতা তুলতে বাধা দিচ্ছে বন দফতর। আমাদের কর্মসূচি তার বিরুদ্ধেই।” পাশাপাশি, বন দফতরের আধিকরিকদের একাংশের বিরুদ্ধে বনসুরক্ষা কমিটিকে কুক্ষিগত করে রাখার অভিযোগ তোলেন তিনি।
যদিও বন দফতরের পাল্টা দাবি, ওই মহিলারা জঙ্গলের কচি শালগাছ থেকে পাতা তুলছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বনসুরক্ষা কমিটির লোকজন নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগও করেছেন। রঘুনাথপুর রেঞ্জ অফিসার বিবেক ওঝা জানান, গড়পঞ্চকোটের পাহাড়ে একশো হেক্টর জমিতে শালগাছ বসানো হয়েছে। গাছগুলি এখনও বড় হয়নি। এ অবস্থায় ওই গাছের পাতা তুললে গাছের মারাত্মক ক্ষতি হত পারে। তাঁর দাবি, ‘‘বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যেরা মহিলাদের কেবল পাতা তুলতে বারণ করেছিলেন। কোনও ভাবেই তাঁদের আটকে রাখা বা হেনস্থা করা হয়নি।’’
বিষয়টি নিয়ে আদিবাসী সংগঠনটির সঙ্গে আলোচনা করে কোথায় সমস্যা, তা দেখা হবে বলে জানান বন দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক।