কলেজের গেটে তালা ছাত্রদের, আটকে কর্মীরা

পুলিশ সূত্রে খবর, রামপুরহাট থানার মুরগাডাঙার ওই কলেজে এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ প্রশাসনিক ভবন, অ্যাকাডেমিক ভবনের প্রবেশদ্বারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৪৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত

পঠনপাঠনের সঠিক পরিকাঠামো নেই কলেজে— সেই অভিযোগে কর্মীদের ‘তালাবন্ধ’ বিক্ষোভ দেখালেন পড়ুয়াদের একাংশ। বুধবার রামপুরহাট ১ ব্লকের আইটিআই কলেজে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, রামপুরহাট থানার মুরগাডাঙার ওই কলেজে এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ প্রশাসনিক ভবন, অ্যাকাডেমিক ভবনের প্রবেশদ্বারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ওই কলেজে পড়াশোনার সঠিক পরিকাঠামো নেই। পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে, কলেজে যাতায়াতের রাস্তাও খারাপ, সমস্যা রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও। পড়ুয়াদের নালিশ, কলেজে ছাত্রাবাস নেই, নেই ক্যান্টিন। তার জেরে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি, আজিমগঞ্জ বা বীরভূমের নলহাটির মতো জায়গার বাসিন্দাদের যাতায়াতে দুর্ভোগ হয়। তা ছাড়া কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষকেরও অভাব রয়েছে। অভিযোগ, সব ক্লাসে পর্যাপ্ত সংখ্যক বেঞ্চ না থাকায় অনেককে দাঁড়িয়ে থেকে পড়াশোনা করতে হয়। পরীক্ষাগারের কিছু যন্ত্রও বিকল। পড়ুয়াদের অভিযোগ, ওই কলেজে ‘ক্যাম্পাসিং’-এর ব্যবস্থাও নেই। হয় না কলেজ-ফেস্ট।

পড়ুয়াদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এ সব বিষয়ে জানালেও সুরাহা হয়নি। সে জন্যই তাঁরা আন্দোলনের পথে এগোতে বাধ্য হয়েছেন। বুধবার দুপুরে রামপুরহাট ১ ব্লকের ওই কলেজে দেখা যায়, পড়ুয়ারা কলেজের মূল প্রবেশপথের সিঁড়িতে বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা আটকে সামনে বেঞ্চ রেখে দেওয়া হয়েছে। গেটের ভিতরে আটকে রয়েছেন কলেজের আট কর্মী।

Advertisement

অধ্যক্ষ কৃষ্ণেন্দু সিট এ দিন কলেজে ছিলেন না। ছাত্রদের আন্দোলন, অভিযোগ এবং বিভিন্ন দাবির প্রসঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

তালাবন্ধ থাকা কলেজের কর্মীদের বক্তব্য, ছাত্রদের সমস্ত অভিযোগ সঠিক নয়। কিছু সমস্যা রয়েছে, যে গুলি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, বুধবার সকালে একটি ক্লাস হওয়ার পরেই ছাত্রদের একাংশ কাউকে কিছু না জানিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। কর্মীরা জানান, অধ্যক্ষ অফিসের কাজে বাইরে গিয়েছেন। বিক্ষোভের বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানানো হয়েছে। খবর গিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের কাছেও।

এ দিন দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ পুলিশ কলেজে আসে। পড়ুয়া ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশকর্মীরা। কিন্তু পড়ুয়ারা জানিয়ে দেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা না হলে আন্দোলন চলবে।

কলেজের সভাপতি কাজি সিরাজুল ইসলামের অভিযোগ, ‘‘ছাত্রদের একাংশ ক্লাসে না গিয়ে কয়েক দিন ধরে শিক্ষকদের হুমকি দিচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ এ সব মেনে নেবেন না।’’ তাঁর দাবি, এ বছরও কলেজে ‘ক্যাম্পাস ইন্টারভিউ’ হয়েছে। রাজ্য সরকারের কারিগরী শিক্ষা দফতর ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদল প্রতি বছর কলেজ পরিদর্শনে আসেন। কলেজে সমস্ত বিভাগে ভাল ভাবেই পড়াশোনা হয় বলে দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ছাত্ররা কলেজে বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ তা দিতে রাজি না হওয়ায় এই আন্দোলন করা হচ্ছে।’’ যদিও পড়ুয়াদের তরফে এ কথা অস্বীকার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement